‘মুক্তিযোদ্ধের চেতনায় পরবর্তী প্রজন্মকে উজ্জীবিত করতে’ তৃতীয় বারের মতো বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে হাঁটলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা বিমল পাল। ৪৫ কিলোটিমটির হেঁটে নাজিরপুর যুদ্ধ দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।
নেত্রকোনার কলমাকান্দা ঐতিহাসিক নাজিরপুর যুদ্ধ দিবসে শহীদ হওয়া সাত শহীদের প্রতি শ্্রদ্ধা জানাতে ‘মুক্তিযোদ্ধার স্মরণ’ পদযাত্রাটি করেছেন বিমল পাল। এটি ছিলো তার তৃতীয় পদযাত্রা। মঙ্গলবার ভোর থেকে শুরু করে ৪৫ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে তিনি পৌছেছেন কলমাকান্দা সীমান্ত উপজেলার লেঙ্গুরা ইউনিয়নের ফুলবাড়িয়া এলাকার ভারত বাংলাদেশ ১১৭২ নং পিলারের নিকট সমাধিস্থলে। নেত্রকোনা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পদাযাত্রাটি করেছিলেন। এর আগে সোমবার সন্ধায় এই পদযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন স্থানীয় শহীদ মিনারে পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম খান।
বিমল পাল জানান, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিছন্ন মানসিকতাসম্পন্ন তরুণ প্রজন্ম বিনর্মিানে এবং আদর্শবান দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরীতে এই পদযাত্রা। তিনি এর আগে প্রথম পদযাত্রা করেছিলেন ১০ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ হানাদার মুক্ত দিবস উপলক্ষে ভারতের মেঘালয়ের পাদদেশ হালুয়াঘাট থেকে ময়মনসিংহ সদর পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার। দ্বিতীয়টি করেছেন গত ২১ শে ফেব্রুয়ারীতে ভাষা শহীদদের স্মরণে ময়মনসিংহ থেকে একুশে পদকপ্রাপ্তদের শ্রদ্ধা জােিনয় তাঁদের স্মরণে ময়মনসিংহ থেকে ভালুকা ৫২ কিলোমিটার ‘বিজয় পদযাত্রা’।
২৬ জুলাই ছিলো নেত্রকোনার কলমাকান্দায় ঐতিহাসিক নাজিরপুর যুদ্ধ দিবস। ১৯৭১ এই দিনে জেলার কলমাকান্দা উপজেলার নাজিরপুরে পাকবাহিনীর অতর্কিতে হামলার শিকার হয়ে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে সম্মুখযুদ্ধে প্রাণ হারান সাত জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। সেদিন পাক বাহিনী পিছু হটলেও শহীদ হয়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নেত্রকোনার আবদুল আজিজ ও মো. ফজলুল হক, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার মো. ইয়ার মামুদ, ভবতোষ চন্দ্র দাস, মো. নূরুজ্জামান, দ্বিজেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস ও জামালপুরের মো. জামাল উদ্দিন। আহত হয়েছিলেন কোম্পানি’র কমান্ডার নাজমুল হক তারাসহ কয়েকজন।
পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আহত কোম্পানি’র কমান্ডার নাজমুল হক তারা শহীদদের মরদেহ উদ্ধার করে কলমাকান্দার লেংঙ্গুরার পাহাড়ি নদী গণেশ্বরী পাড়ের ফুলবাড়ীর নামক ভারত সীমান্তে ১১৭২ নং পিলার সংলগ্ন সমাহিত করা হয়। এরপর আহত কোম্পানি’র কমান্ডারকে চিকিৎসার জন্য ভারত নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে নেত্রকোনা জেলা ও বৃহত্তর ময়মনসিংহের মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবছর দিনটিকে ঐতিহাসিক নাজিরপুর যুদ্ধ দিবস হিসেবে পালন করে আসছে।