Saturday, October 5, 2024
মূলপাতানেত্রকোনার সংবাদমদন উপজেলা৫ আগস্ট পর্যটন খ্যাত হাওরাঞ্চলের উচিৎপুর ট্রলার ঘাটের এক কলঙ্কিত দিন

৫ আগস্ট পর্যটন খ্যাত হাওরাঞ্চলের উচিৎপুর ট্রলার ঘাটের এক কলঙ্কিত দিন

জেলার পর্যটন খ্যাত হাওরাঞ্চলের মদন উচিৎপুর ট্রলার ঘাটের আরেক নাম ট্রাজেডি দিবস। এই দিনটিকে উচিৎপুর ট্রলার ঘাটের একটি কলঙ্কিত দিন বলে দাবী এলাকার মানুষের। গত বছরের ৫ আগস্ট ঈদ পরবর্তী আনন্দ করতে করোনকাল উপেক্ষা করেই হাওর ভ্রমন করতে এসে প্রাণ হারিয়েছিলো ১৮ জন। আজ নিহতদের এব বছর পূর্ন হলো।

গত বছরের এ দিনে ময়মনসিংহ জেলা সদরের চরসিরতা ইউনিয়নের কোণাপাড়া, গৌরিপুর ও নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার তেলিগাতির দুটি মাদ্রসার ৪৮ জন ছাত্র শিক্ষক এসেছিলেন হাওরে নৌকা ভ্রমণে।

বৈরী আবহাওয়াও যেনো তাদের কাছে সেদিন তুচ্ছ ছিলো। কুলিয়াটি গ্রামের লাহুত মিয়ার ট্রলারে নৌকার চালক অতি মুনাফার লোভে পড়ে অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে ঘাট থেকে সেদিন সকালে নৌকা ভাসায় দিগন্তের উদ্যোশ্যে। পরে কিছুদূর যেতেই রাজালিকান্দা এলাকায় নৌকাটি ঢেউ এবং বাতাসের তোড়ে উল্টে তলিয়ে যায়। সেদিন অন্যরা সাঁতরে পাড়ে উঠতে পারলেও একই পরিবারের আটজনসহ মোট ১৮ জন নিখোঁজ হয়।

পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের অভিযানে ওদিনই ১৭ জনের লাশ উদ্ধারে করে। পরের দিন অন্য একজনের লাশ ভেসে ওঠে। নিহতদের মধ্যে ৬ জনই শিশু ছিলো। সেদিন পর্যটন ঘাট এলাকাসহ পুরো জেলার বাতাসে বইছিলো শোকের ছায়া। আনন্দ করতে করতে ১৮ টি তাজা প্রাণ হয়ে গেলো নিথর দেহ। স্বজনদের আহাজারি আর কান্নায় সুনীল আকাশ ভারী হয়ে যায়। মুহূর্তেই হাওরের সৌন্দয্য রূপ নিয়ে নেয় বিষাদে। সৌন্দর্য্যের বদলে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের ধারণ করতে হয় সাংবাদিকদেরও।

এ ঘটনায় তৎকালীন জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম ওই রাতেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। সাত কার্যবিসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের কথা থাকলেও দুই সপ্তাহ পরে ১৯ আগস্ট প্রতিবেদন জমা দেয়। কিন্তু ওই কমিটি ঝড়োবাতাস ও ঢেউকে দায়ী করে নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে বেশ কিছু সুপারিশ লিখে দেন।

অন্যদিকে ঘটনার তদন্ত করে দুর্ঘটনার পর ভাই ভাই পরিবহন নামক ট্রলারটির মালিক লাহুত মিয়া, চালক আল আমিন ও সহযোগী কামরুল ইসলামকে আসামি করে নৌ পুলিশ বাদী হয়ে ঢাকার নৌ আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলার প্রেক্ষিতে ২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল রাতে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় মদন থানা পুলিশ। পরবর্তীতে জামিনে বেরিয়ে সেই আগের ফিটনেসবিহীন ট্রলার নিয়ে বহাল তবিয়তেই তারা আবার শুরু করেন নৌ চালনা।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments