কবি ও কবিতা
আলপনা বেগম
নি:সঙ্গতার জীবন্ত উদাহরণ হেলাল হাফিজ। তিনি আজীবন যাপন করেছেন একাকীত্বকে।
যেমন উড়িয়েছেন টাকা তেমনি ফুরিয়েছেন সময়।
তার একাকীত্ব কারো কারো কাছে কষ্টের হলেও তিনি এটিকে উদযাপন করেছেন দৃঢ় ভাবে।
কবি হেলাল হাফিজ শুধু একজন কবি নন। তিনি কবিদেরও কবি।
তার কবিতায় যেমন বিদ্রোহ আছে তেমনি আছে প্রেম। আছে দু:খ কষ্ট। আছে এক জীবনের আকাংখা।
তিনি জীবনকে কেমন করে পুড়াতে হয় তা লিখেছেন সুন্দর ভাবে। জীবনকে যাপন করাই শুধু কাজ নয়, এটিও ফুটিয়ে তুলেছেন নান্দনিক হাতের লেখায়।
খুব সীমিত লিখে অসীমে রয়ে গেছেন।
যার প্রতিটি শব্ধ প্রতিটি বাক্য উপলব্ধির এক একটি বিশাল পাহাড়। গভীরতা সাগরের। বুঝতে হয় মন দিয়ে। অনুভব করতে হয় হৃদয় লাগিয়ে। যে কোন মানুষ এক একটি শব্দের ঘনত্ব বুঝে জীবনকে দেখে নিতে পারে কল্পনায়।
আর এ কারণে ঈর্ষনীয় জনপ্রিয় এই কবি।
অবশ্যই এমন কবিকে আরও অনেক আগেই আমাদের দেশের সর্বোত্তম পুরস্কারে ভূষিত করা যেতে পারতো।
কিন্তু জাতীয় পুরস্কারগুলোতেও আমাদের দেশে চলে তেলের বাণিজ্য। যার কারণে এসব পুরস্কারের ধার কবিও ধারেন না আমার মনে হলো।
বয়েই গেছে তার।
এক জীবনে এতো জনপ্রিয়তা যার তার আর কিই বা লাগে। তিনি মানুষ জমাতে চেয়েছেন, পেরেছেনও।
এই কবিও জন্য এখন প্রয়োজন তার দেখভাল সরকারি বেসরকারি অনেকের মধ্য থেকে করে আসা।
একজন ফিজিও থেরাপিষ্টের খুব প্রয়োজন।
কবির হাঁটা চলাটা স্বাভাবিক গতিতে এনে দিতে পারলেও খুব ভালো হতো।
কবির জন্য এইটা করা কি রাষ্ট্রের জন্য খুব বেশি ব্যয়বহুল?
কেউ কি নেই কবির সেবায় এইটুকু সময় এবং শ্রম দিয়ে কবিকে আমাদের মাঝে আরও দুএকটি শব্দ প্রসবের ব্যবস্থা করে দেয়ার?
আমি চাই কবিকে ভালোবাসার মাধ্যমে রাষ্ট্রের দায়িত্বপ্রাপ্তরা অথবা ঢাকার বড় বড় মানুষেরা এগিয়ে গিয়ে চোখ টা একটু পরীক্ষা করাক। একজন থেরাপিষ্টকে নিয়োজিত করে হাতটা সচল করাক।
কবি শেষ দিন পর্যন্ত লিখে যাক….
লেখক সংবাদকর্মী