দেশজুরে বিদ্যুতের সমস্যা প্রকট। তারই ধারাবাহিকতায় নেত্রকোনা জেলাও। যেখানে দৈনিক প্রয়োজন ১৮ থেকে ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সেখানে পাওয়া যায় মাত্র ১২ মেগাওয়াট। যেকারণে লোডশেডিংসহ নানাভাবে বাকিটার চাহিদা মেটাতে হয় বলে জানা গেছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের নেত্রকোনা অফিস সূত্রে। এদিকে বিদ্যুৎ দিয়ে চার্জ করা বিভিন্ন যানবাহনের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক, অটো রিক্সা ও মিশুক। এগুলো ছাড়াও বড় বড় শপিংমল, রেষ্টুরেন্ট, সরকারি বেসরকারি অফিসসহ নানাভাবে অপচয় হয় বিদ্যুৎ।
আর এই বিদ্যুতের ঘাটতি মেটানোর বাহানায় দিন রাত চলে লোডশেডিং। তারমধ্যে বুধবার থেকে টাইম সিডিউল দেয়া হলেও সিডিউলের বাইরে দিনে কয়েকবার প্রায় প্রতি এলাকায় এই বিদুৎ বিভ্রাট হয়।
নেত্রকোনা শহরে প্রায় প্রতিদিন পৌরসভার লাইসেন্সধারী এবং লাইসেন্স ছাড়া ইজিবাইক, অটো রিক্সা মিশুক চলে ৮ থেকে ১০ হাজার। যেগুলোর সব কটি চার্জের মাধ্যমে চলে।
নেত্রকোনা পৌরসভার প্যানেল মেয়র এস এম মহসীন আলম জানান, পৌরসভায় দুই শিফটে সাদা এবং হলুদ ইজিবাইক চলে ২৩শত। রিক্সা রয়েছে ১৫ শত এবং মিশুক ৯ শত।
অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সমিতির নাম করে এবং বিভিন্ন মহলের মাধ্যমে লাইসেন্স ছাড়াই ইজিবাইক চলে লাইসেন্সধারীর দ্বিগুনের চেয়ে বেশি। অর্থাৎ চার থেকে পাঁচ হাজার প্রায়। যেগুলো টোকেনের মাধ্যমে প্রভাবশালীরা ভাড়া দিয়ে চালিয়ে থাকেন।
এদিকে বিদ্যুত বিভাগের নেত্রকোনা নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান মাহমুদ এলাহি জানান, প্রতি অটোতে আনুমানিক ১২ থেকে ১৫ ইউনিট অর্থৎ এক থেকে দেড় কিলোওয়াট বিদ্যুত লাগে। পিডিবির আওতায় ২০৫ টি ব্যাটারিচালিত চার্জের অনুমোদিত সংযোগ রয়েছে। সে হিসেবে এক দশমিক ৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগার কথা। চালু রয়েছে ৯৪ টি সংযোগ। এছাড়া নিজ প্রতিষ্টানে এবং বাড়িতে যেগুলো হয় সেগুলোর হিসেব নেই।
পৌরসভার লাইসেন্সধারী ২৩শত ইজিবাইকের হিসেব অনুযায়ী প্রতিদিন বিদ্যুত লাগবে ৩ দশমিক ৪৫ মেগাওয়াট। রিক্সা প্রতি ৩০০ কিলোওয়াট হলে ১৫ শ রিক্সা এবং ৯শত মিশুকে আসে দশমিক দুই মেগাওয়াট। সব মিলিয়ে বিদ্যু লাগবে চার মেগাওয়াটের মতো। এদিকে নেত্রকোনায় বিদ্যুৎ পাই ১২ মেগাওয়াট। প্রায়জন আছে ১৮ থেকে ২০ মেগাওয়াট।
তবে লাইসেন্স ছাড়া যেগুলো রয়েছে সেগুলোর হিসেব দিতে পারেনি বিদ্যুত বিভাগ। এদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এসব যানেই যদি প্রায় অর্ধেক বিদ্যুৎ চলে যায় তবে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমবে না। তারা মনে করেন এসব জানের ক্ষেত্রে নিজ নিজ বাহনের জন্য নিজস্ব সোলার অর্থাৎ সৌর বিদ্যুত ব্যবহার করায় বাধ্য করা যেতে পারে। পাশাপাশি অনিয়নিয়ন্ত্রিত বাহন চলাচল বন্ধে কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ নেয়া উচিৎ।