নেত্রকোনায় সমাজসেবার আওতায় নগদে পাঠানো বয়স্ক, বিধবাসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সরকারের দেয়া প্রদত্ত ভাতা যাচ্ছে ভুতুরে নাম্বারে। কেউ কেউ এক দুবার পেলেও অনেকে পাচ্ছেন না একেবারেই। ভুক্তভোগী নারী পুরুষরা ঘুরছেন জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে। এদিকে জনপ্রতিনিধিরাও নানা ভাবে যোগাযোগ করে পাচ্ছেন না কোন কুল কিনারা।
খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, মিলে শ্রমিকের কাজ করা সিন্ধু রানী ভেবেছিলেন কষ্টের পরে একটু সুখের মুখ দেখবেন। দিনের মুজুরী দিয়ে কোন রকমে সংসার চলে। তিনটিই মেয়ে। অন্যদের সাথে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দিয়েছিলেন একটি বিধবা ভাতার কার্ড করে। তিনি ব্যাংক থেকে টাকাও তুলেছেন আগে। এখন নতুন করে নগদে মোবাইলে পাওয়ার কথা। কিন্তু এখন আর তিনি পান না কোন টাকাই।
সিন্ধু রানীর মতো আরো অনেক শ্রমিক সহ নির্যাতিতা নারী রয়েছেন যাদেরকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সমাজসেবার আওতায় বিভিন্ন ভাতার বই করে দিয়েছেন। তারা সবাই টাকা পেতে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিদিন ধর্না দিচ্ছেন। কিন্তু প্রতিকার মিলছে না।
পুস্প রানীও বলেন আগে ব্যাংক থেকে ভাতা তুলতে হয়তো দিনটি চলে যেতো। কিন্তু কেউ টাকা নিতো না। এখন সরকার সহজ করতে মোবাইল ব্যাংকের মাধ্যেমে নগদে ব্যবস্থা করেছেন যাতে ঘরে বসেই টাকা তুলতে পারেন। অথচ এখন টাকা ভুতে নিয়ে যাচ্ছে। এসব শুনে প্রতিদিন জনপ্রতিনিধিরা পড়েছন বিপাকে।
সিংহের বাংলা ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম জানান, সরকারের ভালো একটি উদ্যোগে টাকাও যাচ্ছে এদিকে উপকারভোগীরাও পাচ্ছে না। সুবিধা নিচ্ছে প্রতারক মহল। এটি বের করে কার্যকরি পদক্ষেপ নেয়ার দাবী তাদের।
সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানালেন, সদর উপজেলার মোট ৩৪, ২৬৫ জনকে এই ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। তারমধ্যে বয়স্কভাতা ১৭২৮৯, বিধবা ভাতা ১২৮৯৫, প্রতিবন্ধী ভাতা ৩৯৬২ ও প্রতিবন্ধী শিক্ষা উপবৃত্তি ভাত ১১৯জন।
তিনিও জানান প্রথমে অনেক মৃতব্যাক্তিদের নামেও একাউন্ট চলে আসছিলো। আমরা এগুলো খোঁজ নিয়ে বাতিল করেছি। এখন যে সমস্যা সেটি নিয়েও উধ্বতন বারাবর লিখিত পাঠিয়েছি। এখন পর্যন্ত ২৫৫ জনের নাম উল্লেখ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে খোঁজ করে নগদের অফিস পাওয়া না গেলেও সোয়েব নামের একজনের নাম্বার পাওয়া যায় যিনি নেত্রকোনা প্রতিনিধিত্ব করেন। তার সাথে কথা বললে তিনি অন্য একজনের নাম্বার দিয়ে কথা বলতে বলেন। পরে ওই নাম্বারে কথা বললে তিনি নদগেই এক্সিকিউটিভ ফাহাদ হিসেবে পরিচয় দিয়ে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারবেনা না বলে অপরাগতা প্রকাশ করে সংশ্লিষ্ট মিডিয়ার ওয়েব অফিসের মাধমে তাদের নগদের অন্য কর্মকর্তাকে খোঁজ করার পরামর্শ দেন তিনি।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেছেন, তিনি বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছেন। এনআইডি কার্ড ও নাম্বারের গড়মিলের কারণে ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সংশোধনের চেষ্টা চলছে।