নেত্রকোনার বারহাট্টায় পশু চিকিৎসকের অস্ত্রোপচারে প্রসূতি ও নবজাতক মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন বৃহস্পতিবার (০৫ মে) উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা চৌধুরী ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শিহাব উদ্দিন।
প্রসূতি ও নবজাতকের মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাজহারুল ইসলাম এ তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে আগামী তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকলেও নিজ উদ্যোগে এ মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে তদন্ত কমিটি করেছে প্রশাসন। বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান তদন্ত কমিটির সদস্যরা। সেখানে উপস্থিত এলাকাবাসী, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তারা।
তদন্ত কমিটির প্রধান স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সবদিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযুক্তকেও জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি তার সনদপত্র দেখাতে বলা হবে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার মূল কারণ উদঘাটন করা হবে।
কমিটির অপর সদস্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা চৌধুরী বলেন, তদন্তে দোষী প্রমাণ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বুধবার (৪ মে) দুপুরে উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের দক্ষিণপাড়ায় পশু ডাক্তারের করা সিজারের পর নবজাতকসহ শরীফা আক্তার (১৯) নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠে।
গৃহবধূর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শরীফা বারহাট্টা সরকারি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পাস করেন। গত বছর সুনামগঞ্জ জেলার তাহেরপুর এলাকায় বিয়ে হয় শরীফার। তার স্বামীর নাম মহসিন মিয়া। সন্তান প্রসবের সময় ঘনিয়ে এলে গত সপ্তাহে চন্দ্রপুর বাবার বাড়িতে নিয়ে আসা হয় তাকে।
ভুক্তভোগীর মা মাফিয়া আক্তার বলেন, শরীফার প্রসব ব্যথা শুরু হলে কাশেম ডাক্তারকে খবর দেওয়া হয়। তিনি দেখে বললেন, সবকিছু স্বাভাবিক আছে কোনো সমস্যা নেই। আমরা নেত্রকোনা নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম কিন্তু তার কথায় ভরসা পেয়ে আর নেইনি। আমরা সাধারণ মানুষ। ডাক্তারের কথা মতোই সব করেছি। পরে এক পর্যায়ে আমাদের বাসায় এসে তিনি সিজার করেন। ওষুধ স্যালাইন না থাকায় এগুলো আনতে একজনকে মোহনগঞ্জ পাঠানো হয়। তবে ওষুধ নিয়ে আসার আগেই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শরীফার মৃত্যু হয়।