নেত্রকোনায় জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া ফুটফুটে এক সদ্য প্রসূত (ছেলে) নবজাতক শিশুকে দত্তক নিতে আসা আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছে উপজেলা শিশু উন্নয়ন বোর্ড। বৃহস্পতিবার দুপুরে নেত্রকোনা সদর উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে চলছে আবেদনকারীদের যাচাই বাছাই।
একজন একজন করে ডেকে সাক্ষাৎকার নিচ্ছন ইউএনও। যে দম্পতিকে যোগ্য মনে হবে পরবর্তীতে সরেজমিন তদন্ত শেষে সেই দম্পতিকেই বৃুঝিয়ে দেয়া হবে শিশুটি এমনটাই জানালেন কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার। এদিকে শিশুটিকে দত্তক নিতে আসা নারী পুরুষরা উপজেলা পরিষদের বারান্দায় ভীড় জমিয়েছেন। দেখে মনে হবে চাকরির ইন্টারভিও। সবাই বলছেন তারাই রাখবেন শিশুটিকে নিরাপদে। এদিকে কমিটি বলছে শিশুর নিরপাত্তায় জমি লিখে দেয়া সহ অর্থ ডিপোজিট করে দিতে হবে। তবেই দেয়া হবে শিশুটিকে।
উপজেলা শিশু উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সদর উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, গত রোববার (৬ ফেব্রুয়ারী) মধ্যরাত নেত্রকোনা শহরের পৌরসভাধীন নাগড়া সওদাগর পাড়ার একটি জঙ্গল থেকে উদ্ধার হওয়া শিশুটিকে পরম মমতায় আগলে রেখেছেন নেত্রকোনা সদর হাসপাতালের নার্স ও আয়ারা।
সমাজ সেবার অর্থায়ন ও সহযোতিায় শিশুর খাওয়া চিকিৎসা সম্পুর্ন চলছে ভালোভাবেই। শিশুটিও বর্তমানে বেশ ভালো রয়েছে। শিশুকে দত্তক নিতে ইতিমধ্যে ৯ জন দম্পতি আবেদন করেছেন উপজেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ে।
এ উপলক্ষেই বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী উপজেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের ১১ সদস্যের টিম বসেন এসকল আবেদন যাচাই বাছাইয়ে। অন্যদিকে ভীর জমে যায় উপজেলা পরিষদ চত্বেরের বারান্দায়। এসময় যাচাই বাছাইসহ আবেদনকারীদের একজন একজন করে সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন কমিটির সদস্যরা। শিশু আইনের ৯২ ধারায় উল্লেখ আছে সরেজমিন যাচাই বাছাই করে পরে শিশুকে হস্তান্তর করতে হবে। যাদেরকে যোগ্য মনে হবে তাদেরকে আরো নিবিড়বাবে সরেজমিন তদন্ত করে আমরা শিশুটিকে হস্তান্তর করবো।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারী মধ্যরাতে অটো চালক রাসেল তখন অটো রেখে ঘরে ফিরছিলেন। এমন সময় ওই এলাকার হামিদুল ইসলামের ভাড়া দেয়া বাসার সামনে একটি জঙ্গলের পাশ থেকে শিশু কান্নার আওয়াজ ভেসে আসে। পরে সে স্থানীয়দেরকে এবং পুলিশকে জানায়।
খবর পেয়ে পুলিশ সুপারের নির্দেশে নেত্রকোনা মডেল থানার পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে। এরপর রাতেই দ্রুত শিশুটির পরিচর্যার জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী নিজে শিশুটিকে দেখে এসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেন।