জীবিত থেকেও ভোটার আইডি কার্ডে মৃতদের তালিকায় নাম রয়েছে নেত্রকোনার দুর্গাপুরের এক গ্রামেরই চার বাসিন্দার। যে কারণে জমি বেচা-কেনা থেকে শুরু করে সরকারের ১০ টাকা কেজি চালসহ বয়স্ক এবং বিধাব ভাতাও ভাগ্যে জোটেনি তাদের।
জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা দুর্গাপুরের বেশিরভাগ মানুষই কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত প্রায় অনেকে কৃষিকাজ পরিচালনায় ব্যাংক কিংবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে কওে থাকেন চাষবাস। তবে জমির কাগজপত্র কিংবা ভোটার আইডি কার্ডের ত্রুটিজনিত কারণে প্রায়ই ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের।
উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বারইকান্দি গ্রামের চার বাসিন্দা আছিয়া খাতুন (৫৫), জামাল মিয়া (৪৫), ইদ্রিস আলী (৫৪) ও সুবাহান মিয়া (৭৫)। বেঁচে থেকেও সরকারি সকল কাগজপত্রে মৃতদের তালিকায় তাদের নাম। বাজারে সবার সাথে বসে আলোচনাসহ একসাথে বসে চা খেলেও যেনো প্রমাণপত্রে মৃত তারা। একই গ্রামে চারজনের এমন অবস্থা দেখে অবাক গ্রামের বাসিন্দারা।
মৃতদের তালিকায় নিজেদের নাম থাকায় দিনের-পর-দিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। যে কারেণে ব্যাংকের ঋণের আবেদন করে মৃত ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে এই সেবা আর পাননি জামাল মিয়া। ইদ্রিস আলীর সন্তানরা পড়াশোনা শেষ করলেও চাকরি নিয়ে ইন্টারভিওয়ের সময় পড়ছেন জটিলায়। বয়স বেশি হলেও বয়স্কভাতা পাচ্ছেন না সুবাহান মিয়া। আছিয়া খাতুনের বেলায়ও একই অবস্থা। বিধাব হয়েও ভাতা নেই কপালে। করোনাকালে বিভিণ্ন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া খাদ্য উপহার পাননি তারা কেউই। কারণ ভোটার আইডি কার্ড না থাকায় তাদেরকে সাহায্য দিতে পারেননি স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরাও।
ভুক্তভোগীসহ স্থানীয়দের অভিযোগ, তথ্য সংগ্রহকারী স্থানীয় স্কুল শিক্ষকরা সঠিকভাবে তথ্য যাচাই না করে ঘরে বসে মনগড়া তথ্য সংগ্রহ করায় এমনিট হয়েছে। তাদের অবহেলার শিকার হয়েছেন এই মানুষগুলো। তথ্য সংগহকারীদের থেকে এখন ক্ষতিপূরণ আদায় করে শাস্থি দেয়া প্রয়োজন বলে দাবী জানান তারা।
এ ব্যাপারে দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার ফারহানা শিরিন জানান, তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের সময় মৃত ব্যক্তিদের নাম কর্তন করে নিয়ে আসায় তখন জীবিত ব্যক্তিরাও মৃত হিসেবে কর্তন হয়েছেন। তবে নির্বাচন অফিসে এসে নতুন করে আবেদন করলেই আমরা তাদের আবেদনগুলো প্রেরণ করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।