নেত্রকোনায় স্বগীর্য় বাবার ইচ্ছে পূরণে হেলিকপ্টারে করে বউ আনল ছেলে। আর এমন আয়োজন দেখতে শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে ভীড় জমালেন পাড়া প্রতিবেশিসহ উৎসুক জনতা। এরপর বাড়ি নিয়ে গেলেন মোটরসাইকেলে চড়িয়ে। এমন এক ব্যাতিক্রমী বিয়ের যাত্রা দেখে আনন্দিত তরুণ প্রজন্ম। বাবা ছিলেন নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালের ডোম দীলিপ বাসফোর। ছেলে অপু বাসফোর নিজেও একজন পরিছন্ন কমীর্। কিন্তু বাবা স্বপ্ন দেখেছিলেন দুই ছেলের একজনের বউ আনবেন হোলিকপ্টারে করে। আজ মৃত বাবার সেই ইচ্ছাই পূরণ করলেন ছেলে।
আজ বুধবার বিকালে তিনটায় কুড়িগ্রাম থেকে হেলিকপ্টারটি নেত্রকোনার শহরের ঐতিহাসিক মোক্তারপাড়া মাঠে নামে। এদিকে হ্যালিকপ্টারে চড়িয়ে বউ নামানোর দৃশ্য দেখতে ভীড় জমান আত্মীয় স্বজনরা। জীবনে প্রথমবার আকাশে উড়ার দৃশ্য দেখতে দুপুর থেকেই তারা মাঠের চারপাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে থাকেন। পরে হেলিকপ্টার নামতেই আবেগে আপ্লুত হন মা বোন ফুফুসহ আত্মীয় স্বজন এবং প্রতিবেশিরা।
এর আগে ১৭ জানুয়ারী গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে সাতটায় জেলা সদর হাসপাতালের কোয়াটার বাসা থেকে অপু বাসফোর বরযাত্রা যায় বাসে চড়ে। ওইদিন রাত্রি সাড়ে ১০ টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত লগ্নতে বিয়ে সম্পন্ন করে কনের পিত্রালয় কুড়িগ্রাম সদরের পাওয়ার হাউসে।
এরপর আজ বুধবার দুপুরে কুড়িগ্রাম স্টেডিয়াম মাঠ থেকে যাত্রা করে হেলিকপ্টারে করে বউ নিয়ে নেত্রকোনা সদরে ফেরেন। সেখান থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে বউ নিয়ে ঘরে ফেরেন অপু বাসফোর। স্বজন ও এলাকাবসাী সূত্রে জানা গেছে, পারিবারিকভাবেই কুড়িগ্রাম জেলা সদরের ভুট্টু হরিজনের তৃতীয় কন্যা সনিতা রানীর সাথে অপু বাসফোরের বিয়ের দিন ধার্য্য হয়। নেত্রকোনা থেকেই হেলিকপ্টারে করে বউ আনার কথা থাকলেও সম্ভব হয়নি। যে কারে সড়ক পথে বরযাত্রা যান অপু। পরে শ^শুর বাড়ি এলাকা থেকে বর কনে হেলিকপ্টারে চড়ে আসেন নিজ এলাকায়। মা শ্যামলী বাসফোর অসুস্থতা নিয়েও মাঠে আসেন ছেলেকে হেলিকপ্টার থেকে নামতে দেখার জন্য। সেইসাথে স্বজন ও এলাকাবাসীও অনেক খুশি আকাশ পথে বউ নিয়ে বাড়ি আসায়।
তারা জানান, অপুর বাবার খুব শখ ছিলো হেলিকপ্টারে করে তার ছেলের বউ আনবে। আর এই শখ পুরণের জন্যই ছেলে তার বউকে নিয়ে আসে আকাশ পথে। এসময় নেত্রকোনার পুলিশ প্রশাসনও হেলিকপ্টার নামতে সাহায্য করেছে। এদিকে অন্যান্য যাত্রীরা বাসে করেই রওয়ানা দেন।
অপু বাসপোড়ের বড় ভাই দীপু বাসফোড় বাবার কাজটিই বেছে নিযেছেন। অপু বাসফোড় কিছুদিন বড় ভাইয়ের সাথে বাবার কাজ করলেও বর্তমানে সে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পরিছন্নকমীর্র চাকুরি পেয়েছে। এর পাশাপাশি পাঠশালা ব্যান্ডের সাথে প্যাড বাজানোর কাজ করেন।
অপু বাসফোর জানায় তার অনুভূতি সে বলে বুঝাতে পারবেনা। তবে তার বাবার ইচ্ছে সে তিল তিল করে জমিয়ে পূরণ করেছে। এভাবে আসতে পেরে কনেও অনেক আবেগাপ্লুত।