Tuesday, April 23, 2024

দখল আর দূষণে মগড়া এখন মরা খাল

কালের আবর্তে নেত্রকোনার বুক থেকে হারিয়ে গেছে অনেক খরস্রেতা নদী। এসবের মধ্যেও যুদ্ধ করে কোন রকমে জেলার মানচিত্রে টিকে থাকে মগড়া। যা কিনা টেম্প নদীর আদলে শহরটিকে প্যঁাচিয়ে রাখলেও এখন মৃত প্রায়। সাধারণ মানুষের আন্দোলনে দুএকবার দখল উচ্ছেদ শুরু হলেও রহস্যজনক কারণে এক আধটা করেই বন্ধ হয়।

স্থানীয়রা জানান, অসংখ্য নদী, খাল-বিল হাওর-বঁাওড় বেষ্টিত নেত্রকোনার একটি অন্যতম নদী মগড়ার এক সময় উত্তাল তরঙ্গ ভরা যৌবন ছিল। নদীর বুক চিরে চলতো বড় বড় ষ্টিমার ,লঞ্চ, কার্গো নৌকা। কিন্তু শহরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত মগড়া নদী দিন দিন বেদখল হয়ে শীর্নকায় খালে পরিণত হয়েছে। নদীর উভয় তীরে অবৈধভাবে দখলকৃত জায়গায় গড়ে উঠছে দোকানাপাট, বাসাবাড়ি, ক্লাব-সমিতিসহ, মসজিদ মন্দিরের নামে নানা স্থাপনা।

নদীতে ফেলা ময়লা আবর্জনা ড্রেন ও পয়নিস্কাশনের ট্যাংকি থাকায় পানি দূষিত হয়ে নদীর সৌন্দযর্যও বিলীন হয়ে গেছে। নদীকে কেন্দ্র করে ৫৭৬ জন জেলে ছিলো শেষ পর্যন্ত যারা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতো।

শাখা প্রশাখা ছাড়াই শুধু ১৪৮ কিলোমিটার মগড়া নদীকে কেন্দ্র করে ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই গড়ে উঠেছিল আজকের জেলা শহর নেত্রকোনা। প্রসার ঘটেছিল জেলার ব্যাবসা-বানিজ্য ও সভ্যতার।

শহরের প্রায় ৬ কিলোমিটারের মধ্যে সাতপাই আনন্দবাজার থেকে কাটলি পর্যন্ত ৩ কিলোমিটারেই ৬৩ টি পয়েন্ট রয়েছে অবৈধ স্থপনা। এর মধ্যে ১৩ টি ইতিমেধ্যে বিলীনও হয়ে গেছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, গত ২০১৯ সনে ৩১৬ টি অবৈধ স্থাপনার বিপরীতে ২৮৫ টি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা দেখালেও দখলে পরিপূর্ণ আগের মতোই। ভূমিহীনরা বলছেন, জমি জায়গা না থাকায় তারা নদীর পাড়ে জায়গা নিয়েছিলেন। কিন্তু উচ্ছেদ অভিযানে শুধু তারাই পড়েছেন। টাকাওয়ালারা শহরজুরে দখলে থাকলেও সমস্যা নেই। এদিকে ঢাকার বুড়িগঙ্গাসহ দেশের বিভিণ্ন নদ-নদী সিএস মূলে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলেও নেত্রকোনার মগড়া নদীর উচ্ছেদ অভিযান চালায় বিআর এস মূলে।

এ বিষেয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকতার্ মোহন লাল সৈকত নানা অযুহাত তুলে ধরে জানালেন, তিনি তখন ছিলেন না। কিন্তু নদী সব সিএস মূলেই দখলমুক্ত করা হবে। জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আবোরো নদী দখল মুক্ত কার্যক্রম হাতে নেবেন বলে জানান।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments