সদয় দৃষ্টিতে দেখতে সাংবাদিকের প্রতি আহবান
নেত্রকোনার মদনে চেকের বই নিয়ে ঋণ দিয়ে সুদের টাকার জন্য মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর ভাতার চেক আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ দিয়েছেন মৃত মুক্তিযোদ্ধা আরজু মিয়ার স্ত্রী আনন্দ আক্তার।
অভিযুক্ত উপজেলার মনিকা পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম।
ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী আনন্দ আক্তার জানান, উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়ের আলমশ্রী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বামী গত ১০ বছর আগে মারা যান। এর পর থেকে সন্তান নিয়ে বিপাকে তিনি।
এমন অবস্থায় পারিবারিক কাজের জন্য মনিকা পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: সিরাজুল ইসলামের নিকট স্বামীর ভাতার চেক বহি জমা দিয়ে ১লাখ টাকা সুদে ধার নিয়েছিলেন। চেক বইয়ের প্রতি পাতায় সই করে দিয়ে রেখেছেন৷
এতে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা করে ২ বছরে সুদে আসলে পরিশোধ হবার কথা রয়েছে। কিন্তু ২ বছর পেরিয়ে এক এক করে ৭ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরেও মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর চেক বই ফেরত পাচ্ছেন না বলে জানান তিনি।
এদিকে লেখাপড়া জনিনা বলে চেক বইয়ের পাতা শেষ হলে আবার নতুন বই তুলিয়ে সই নিয়ে নেন ওই শিক্ষক।
কিন্তু এতো বছর ধরে সুদ আসল গিয়ে আমার টাকা ভোগ করেই যাচ্ছে। উল্টো চেক বই ফেরত চাইলে বিভিন্ন সময় হুমকি ধমকি দেন ওই শিক্ষক।
এদিকে এতোদিন ধরে তিন সন্তান এবং এক সন্তানের পিতৃহীন নাতি নাতনি সহ তিনি ভাতার টাকা উত্তোলণ করতে না পেরে অর্থনৈতিক সংকটে জীবন যাপন করছেন। পরে এ নিয়ে দুদকের ১০৬ নাম্বার সহ বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার পাননি।
সবাইকে ওই দাদন ব্যাবসায়ী ম্যানেজ করে টাকা উত্তোলন করে যাচ্ছেন প্রতি মাসেই। গত মাসে ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দিয়ে আসলেও সেটিও কেমন করে ম্যানেজ করে আবার টাকা উত্তোলন করে ফেলেছে। পরবর্তীতে ভাই শামীম খানের সহযোগিতায় গতকাল সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গিয়ে পুনরায় লিখিত দিয়ে আসেন ভুক্তভোগী।
এদিকে লিখিত অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউ এনও বুলবুল আহমেদ জানান, প্রতিদিন এমন নানা অভিযোগ আসে। তবে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীর অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, এটি ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখতে হবে আগে। সেটা দেখবো। একটি বইয়ে ১০ টি পাতা থাকে। এতোদিন ধরে কিভাবে তুলছে? পরবর্তীতে তাদের দুই পক্ষকেই নিয়েই বসবেন বলেও জানান তিনি।
সরকারি একজন শিক্ষককের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ বিষয়ে জানতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, এখানে নতুন এসেছেন। এমন অভিযোগ পাননি। তবে সাংবাদিকের কাছে শুনেছেন।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি টাকা দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমার আসল টাকা এখনো উঠেনি। তাই আমি টাকা তুলছি।
দাদন ব্যবসা করেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানুষের সমস্যা থাকে তারা টাকা নেয় প্রায় সময়ই।
পরে কয়েক পার্সেন্ট লাভ সহ দেয় বেশি কিছু না।
এর জন্য অভিযোগের কিছু নেই। অনেক আগেই বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে। এখন কেন আবার তুলেছে জানিনা। তবে তিনি বলেন এ বিষয়ে লেখালেখি কম করে আমাকে সদয় দৃষ্টিতে দেখেন।