নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ভেসে আসা একটি বন্য বানরকে উদ্ধার করে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার অভিযোগ উঠেছে উদ্ধারকারীদের বিরুদ্ধে। উপজেলার সদর ইউনিয়নের মায়ানগর গ্রামের একটি বাড়িতে কোমড়ে শিকল বাধা অবস্থায় পাওয়া যায় একটি বানরকে। বানরটিকে গত দুদিন আগে দুর্গাপুর উপজেলার আত্রাখালি নদী থেকে উদ্ধার করেছে স্থানীয় রুবেল মিয়া, হাফেজ মিয়াসহ বেশ কজন যুবক। তারা নদীতে স্রোতে ভেসে আসতে দেখে সাঁতরিয়ে বানরটিকে উদ্ধার করেন।
কিন্তু এটিকে বনে অবমুক্ত না করে কোমড়ে লোহার শিকল দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে রাখেন। আর এই বানর দেখতে আশপাশের ছোট বড় সকলেই ওই বাড়িতে ভিড় জমায়। বিশেষ করে ছোট শিশুরা দেখে আনন্দ পায়। পরে উপজেলার প্রাণী রক্ষাকারী সংগঠন সেভ দ্যা এনিমেল অফ সুসংয়ের সদস্যরা খবর পেয়ে বানরটিকে উদ্ধার করতে ওই বাড়িতে যান এবং উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করেন। উপজেলা প্রশাসন সময় বেধে দিয়ে বানরটিকে অবমুক্ত করতে নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে সংগঠনটির সভাপতি রিফাত আহমদ রাসেল বলেন, আমরা খবর পেয়েই বানরটি উদ্ধারে গিয়েছিলাম উদ্ধারকারীদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বুঝিয়ে বলেছি বনে অবমুক্ত করে দিতে। কিন্তু তারা এটিকে অবমুক্ত করবেনা বলেও জানায়। পরে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বাধ্য হয়েই জানিয়েছি। তিনি আরো বলেন ওই গ্রামে আবু হানিফা নামে আরেক যুবক একটি শিয়ালকেও গলায় শিকল বেঁধে গাছের সাথে আটকে রেখেছে। শিয়ালটি মুরগী খেতে এসে তাদের হাতে আটকা পড়ে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব উল আহসান জানান, বন্যপ্রাণী রক্ষায় স্থানীয় সংগঠনটি আমাকে অবগত করে।
আমি জানার পরপরই তাৎক্ষণিক আটকে রাখা যুবকদের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেছি। প্রাণিটিকে ছেড়ে দিতে নির্ধারিত সময় বেঁধে দিয়েছি। আশা করছি ছেড়ে দেবে। যদি নির্ধারিত সময়ে তারা প্রানিটিকে অবমুক্ত না করে তখন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি এসময় বন্যপ্রাণী রক্ষায় কাজ করা সংগঠনের প্রশংসা করে আরো বলেন, এভাবে মানুষ যদি এগিয়ে আসে প্রাণিসম্পদ রক্ষায় তাহলে প্রাণিগুলো নিরাপদ আশ্রয় পাবে। পরিবেশের ভারসাম্যও ফিরে আসবে।