বন্যা কবলিত জেলা নেত্রকোনাতেও অবশেষে ঈদুল আজহায় কংশের পাড়ে জমেছে পশুর হাট। দিন যত ঘনিয়ে আসছে ততই জমজমাট হচ্ছে হাট। গরু ছাগল মহিষ নিয়ে দূর দূরান্তের খামারি এবং কৃষকরা আসছেন। সাইজে ছোট গরুগুলো বিক্রি হয়ে যাচ্ছে অনেকের প্রথম বাজারেই। আবার বিশাল আকৃতির পশু নিয়ে এবার কিছুটা বিপাকে খামারি এবং কৃষক বিক্রতারা। অনেকেই আবার এক বছর আগে কৃষকের থেকে ৪৭ হাজার টাকায় কিনে ১লাখ ২৫ হাজার টাকায় বেচে দিয়েছেন। জেলার বিভিন্ন পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
জেলার ১০ উপজেলার হাটগুলোতে প্রায় সব কটিতেই পশু বিক্রেতা বেশি। ক্রেতা সমাগমও রয়েছে কিন্তু বেচা বিক্রি হচ্ছে কম। অনেকেই ঘুরে ঘুরে শুধু দেখে যাচ্ছেন। বলছেন দাম বেশি হাঁকায় ক্রয় ক্ষমতার বাইরে বাজার। একই চিত্র নেত্রকোনা সদরের মৌগাতি ইউনিয়নের মজুহাটি হাট, জেলার দুর্গাপুর, কেন্দুয়াসহ বিভিন্ন এলাকার। আবার যারা কিনতে পারছেন তারা পশু নিয়ে খুশিতেই বাড়ি ফিরছেন। তবে বিক্রেতারা জানান, পশু লালন পালনে খরচ বেশি হওয়ায় তারা সঠিক দাম পাচ্ছেন না। যে কারণে পশু বিক্রি করতে পারছেন না।
কেউ কেউ প্রথম দিন এসেই কিনে নিচ্ছেন কুরাবানির পশু। মাঝারি এবং ছোটগুলো বিক্রি হয়ে গেলেও বড় ধরনের গরুগুলোর ক্রেতা পাচ্ছেন না বিক্রেতারা। নেত্রকোনা জেলা সদর থেকে আসা ক্রেতা পলাশ আহমেদ জানান, তিন ঘন্টা যাবৎ ঘুরছেন। এর আগেও দুটি হাট দেখেছেন। কিন্তু দামে বনছে না। যে কারণে পশু কেনা হয়নি। তাই হযতো সামনের বাজারেও দেখতে হবে।
অন্যদিকে বিক্রেতা শামছুল হক তার একটি ষাঁড় ফিরিয়ে নিচ্ছেন। যেটির দাম ধরেছিলেন এক লক্ষ টাকা। কিন্তু ক্রেতারা ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকার উপরে যাচ্ছেন না। গরু পালনে খরচ তুলতে পারবেন কিনা এবার এটি নিয়েই শঙ্কিত। অন্য আরেকটি বাজার ধরার আশায় চলে যাচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত লস হলেও তাকে ছাড়তে হবে হয়তো এমনটি জানালেন হতাশ হয়ে ফেরা সেই বিক্রেতা।
তবে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শহিদুল্লাহ জানান, জেলায় এবার চাহিদা ৯০ হাজারের মতো হলে পশু রয়েছে ৯৫ হাজারেরও বেশি। যে কারণে কোন সমস্যা নেই। কেনা বেচাও ভালই বরছেন তিনি। বাজারে বাজারে ভ্যাটেনারি চিকিৎসকরাও রয়েছেন বলে জানান।
এদিকে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, নেত্রকোনায় ৩১ টি স্থায়ী হাট রয়েছে। এছাড়াও যাচাই বাছাই শেষে ১২৩ টি অস্থায়ী হাট ইজারা দেয়া হয়েছে ঈদুল আজহায়। প্রত্যেক উপজেলায় বাজার মনিটরিং কমিটি রয়েছে। নিরাপত্তার জন্য সার্বিক দায়িত্ব নিয়ে তারা সংশ্লিষ্ট থানার ওসিদেরকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।