এক শিক্ষার্থীকেই পরপর চারবার করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল মদেন। ৮ম শ্রেনিতে পড়–য়া আবিদা বিনতে আজিজ নামে শিক্ষার্থীকে এক সাথেই চারটি ডোজ দেওয়া হয়েছে বলে দাবী করেন শিক্ষার্থীর মা রাজিয়া সুলতানা। শিক্ষার্থীর মায়ের এমন অভিযোগের পর ঐই শিক্ষার্থীকে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) নেত্রকোনা জেলার হাওরাঞ্চল মদন উপজেলায় এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ওই শিক্ষার্থী মদন পৌরসভার মাহমুদপুর গ্রামের আজিজুল হকের মেয়ে ও মদন শহীদ স্বরণিকা পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, সারাদেশের অংশ হিসেবে নেত্রকোনার মদনেও চলছে টিকাদান কার্যক্রম। এরই ধারাবাহিকতায় মদনে স্কুল শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ টিকাদান অব্যাহত রয়েছে।
শনিবার আবিদা ফাইজারের কোভিড ১৯ দ্বিতীয় ডোজ নিতে এলে এক সাথে তাকে চারটি ডোজ দেওয়া হয়েছে বলে দাবী করেন তার মা। তাৎক্ষণিক শিশুটির মা বিষয়টি হাসপাতালের চিকিৎসকদের জানালে তারা ওই শিক্ষার্থীকে পর্যবেক্ষনে নেয়।
শিক্ষার্থী আবিদা বিনতে আজিজ জানায়, আমি ২য় টিকা নিতে শনিবার সকালে মদন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাই। কাগজপত্র নার্সদের কাছে দিলে তারা আমাকে একটি চেয়ারে বসান। পরে আমাকে পর পর ৪ টি টিকা দেন। কেন আমাকে পরপর চারটি টিকা দেয়া হল তা জানতে মাকে জানাই। পরে মা ডাক্তারকে বিষয়টি বললে ডাক্তার আমাকে হাসপাতালে বেডে রেখে পর্যবেক্ষণে থাকতে বলেন। শিক্ষার্থীর মা রাজিয়া সুলতানা বলেন, টিকা দেয়ার সময় আমি বাহিয়ে অপেক্ষা করছিলাম। মেয়েটি টিকা দিয়ে বের হয়ে আমাকে জানায়।
আমি বিষয়টি ডাক্তারকে বলেছি। মেয়েটি মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছে। তাকে ডাক্তার হাসপাতালে অবজারভেশনে রেখেছেন।
মদন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আর এম ও ডাক্তার রিফাত সাইদ জানান, মায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিশুটিকে হাসপাতালে পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। শিশুটির অবস্থা বর্তমানে ভালো আছে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা ডাক্তার হুমায়ুন কবির বলেন, একটি শিশুকে চারটি টিকা দেয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়। কারণ একটি টিকা বাড়তি নষ্ট হলে তা আরেকজনের কম পড়বে। শিশুটিকে হাসপাতালে পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছে। তবে কোন নার্স টিকা দিয়েছে শিশুটি বলতে পারছে না।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সচেতন নাগরিক বলেন, কেউ কেউ টিকা নিতে এসে ধ্কাাধাক্কিতে আহত পর্যন্ত হচ্ছে। আবার অনেকে একটি টিকাও নিতে পারছেনা। অথচ মদনের এই শিক্ষার্থী প্রথম ডোজ সহ এখনের চারটি নিয়ে মোট ৫ টি ডোজ পেয়ে গেছে। বিষয়টি শুনে হাসবো না কাঁদবো বুঝতে পারছি না। তবে যাই হোক কেউ যদি মিথ্যা বলে ভাইরাল হতে চায় অথবা নার্স যদি এমন ভুল করে থাকেন, তাহলে সত্যটা বের করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাই। পাশপাশি টিকা দানে এবং গ্রহণে সকলেকেই আরো সচেতন হতে হবে।