নেত্রকোনায় করোনাভাইরাসে নতুন শনাক্ত হয়েছে ৭৯ জন। মারা গেছেন দুজন। শনাক্তকৃতদের ৪৭ জন পুরুষ ও ৩২ জন নারী। ময়মনসিংহ ল্যাবে গত একদিনে ২৯২ টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ৪৬ জন। জেলায় জিন এক্সপার্ট পরীক্ষায় ৪ জনের মধ্যে শনাক্ত ১ জন। জেলায় র্যাপিড এন্টিজেন টেষ্ট করা হয়েছে ১৩৪ জনের। তারমধ্যে শনাক্ত ৩২ জন। মোট শনাক্তের হার ১৮.৩৭।
এদিকে নেত্রকোনায় পিসিআর ল্যাব না থাকায় মানুষের কাছে পজিটিভ নেগেটিভ এসএস আসতে বিলম্ব হওয়ার বিড়ম্বনায় অনেকেই। বিশেষ করে চাকুরিজীবিরা পড়েন বিপাকে। ৮ থেকে ১০ দিন পর আসে এসএমএস। কখনো আবার আসেই না। যে কারণে অনেকে পজিটিভ হয়েও ঘুরে বেড়ান বা কাজে করেন। আবার অনেকে নেগেটিভ হয়েও কাজে যোগদান করতে পারেন না। জিনএক্সপার্ট বা র্যাপিড এন্টিজেন পরীক্ষায় আবার অনেক সময় ধরা পড়ে না। ধরা পড়ে গিয়ে ল্যাবে এমন অবস্থায় পড়ে অনেক মানুষ হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছেন।
সাতপাই এলাকার রানা জানান, প্রথমে তিনি লক্ষণ নিয়ে নিজের ও বাসার সকলের পরীক্ষা করান। পরিবারের সকলের র্যাপিড এনটিজেন টেষ্টে তিনি বাদে সবাই পজিটিভ আসে। ওইদিন তিনি মাকে হসপিটালে ভর্তি করানোর পরদিনই তার মা মারা যান। এদিকে তিনি নেগিটিভ হওয়ার কারণে অন্যান্য কাজ করে গেছেন। বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও ল্যাবের এস এম এস আসেনি।
পরবর্তীতে প্রায় ৯ দিন পর তিনি এসএমএস পেয়েছেন পজিটিভ। এমন অবস্থায় তিনি সহ আশপাশের মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছেন বলে আরও জানান। তখন যাদের সাথে চলাচল হয়েছে তারাও একটা বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়েন। এ নিয়ে অনেকের সাথে বিবাদও হচ্ছে বলে সরকারি একজন কর্মকর্তাও জানান। তিনি বলেন আমি নেগেটিভ হয়েও এস এম এস ১০ দিন পর আসায় কর্মস্থলে যোগ দিতে পারিনি।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা সদরে আক্রান্তের হার বেশি। সদর উপজেলায় গত একদিনে মোট শনাক্ত ৩২ জন। তারমধ্যে শহরের সাতপাই ৩, নাগড়া ৩, মোক্তারপাড়া ২, কাটলী ২, মঈনপুর ২, কাইলাটি ২, কুরপাড় ২, বাহিরচাপড়া, নিখিলনাথরোড, মালনী, বর্ণী, শিবপ্রসাদপুর, নারায়নপুর, পারলা, জয়নগর, মসজিদ কোয়ার্টার, ফচিকা, ষোলপাই, চকপাড়া, কাংশা, চল্লিশা, নিজামপুর ও গরুহাট্টা একজন করে। এছাড়া জেলার পুর্বধলায় ১১ জন, খালিয়াজুরীরে ২ জন, আটপাড়ায় ৩ জন, মদনে ১ জন, কেন্দুয়ায় ২ জন, দুর্গাপুরে ১০ জন, কলমাকান্দায় ৩ জন, বারহাট্টায় ৫ জন ও মোহনগঞ্জে ১০ জন।
আজ নেত্রকোনা জেলা থেকে মোট নমুনা পাঠানো হয়েছে ১৯৮+০৭=২০৫টি। (সরাসরি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে স্যাম্পল দিয়েছেন ৭ জন)।
এ পর্যন্ত পরীক্ষাগারে ২৭৭৯৯ টি নমুনা পরীক্ষার মধ্যে ২৭৬৮৪ টির রির্পোট পাওয়া গেছে। জেলায় শনাক্ত মোট ৪১৩৭ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২২৭২ জন। এ পর্যন্ত মোট মৃত্যু ১০৩ জন। নতুন মুত্যু দুজনের মধ্যে পুর্বধলা উপজেলায় ৫৩ বছর বয়সের নারী ও সদর উপজেলায় ৬৫ বছর বয়সের পুরুষ।