ওজানের ঢলে নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ২৭ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে বাঁধের পাশাপাশি রসুলপুর গ্রামের পানি ঠেকাতে সড়কে মাটি ও বস্তা ফেলে বাঁধ দিয়ে রাখা হচ্ছে। গ্রামের সমান সমান পানি হয়ে পড়ায় হুমকিতে পুরো হাওর।
কৃষকরা বলছেন আর মাত্র অল্প পানিতেই তলিয়ে যাবে পুরো হাওর। এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে ৩শ৬৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধই এখন ঝুঁকিতে। যে কারণে কৃষকরা যেনো দ্রুত ধান কাটেন সেই আহবান করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত। কৃষকরা জানান, এখনো খালিয়াজুরীর জগন্নাথপুর, রসুলপুরসহ নদীর পশ্চিমের হাওরে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ধান কাটা বাকি রয়েছে।
অতঙ্কে যেগুলো কাটছেন সেগুলোতেও ধানের সমান সমান নষ্ট হচ্ছে। ফলে ফসল কেটেও তেমন লাভ নেই তাদের। যারা ঋণ করে জমি করেছেন তারা একেবারেই মরে গেছেন। কোন ভাবেই বাঁধের ধস আটকানো যাচ্ছে না। একদিকে ভরাট হচ্ছে তো অপর দিকে ধসে যাচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাও বলছেন পানির চাপে মাটি নরম হয়ে ফেটে যাচ্ছে। ১৬ থেকে ১৭ দিন ধরে এভাবেই পানি চাপ দিয়ে রাখায় মাটি নরম হয়ে পড়েছে। তারপরও বাঁধের ভেতরে পানি এখনো প্রবেশ করেনি। আর কয়েকটা দিন পার করতে পারলেই বাঁচানো যাবে পুরো হাওর। সাত কিলোমিটার বাঁধের কির্তনখোলা ২ নং ফোল্ডারের ভেতরে ১৯ হাজার হেক্টর জমি রয়েছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির নেতারা অপর কমিটির বাঁধ দেখিয়ে চারটার স্থলে একটি বাঁধ ঝুঁকি দেখাচ্ছেন। তার নিজেরটা ঠিক রয়েছে বলে কির্তনখোলা বাঁধের ৪ নং পি আইসির নেতা ফখরুল আলম জানান। তিনি আরো বলেন, তাদেরকে আগে বরাদ্দটা দেয়া হয় না। যে কারনে নিজেদের হাত থেকে খরচ করতে হয়।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলায় ১ লক্ষ ৮৪ হাজার ৮২৮ হেক্টর জমির মধ্যে হাওরাঞ্চলে ৪০ হাজার ৯ শ হেক্টর আবাদ হয়েছে। তারমধ্যে খালিয়াজুরীতেই ২০ হাজার হেক্টর। ইতিমেধ্য ধনু নদরে পানি বেড়ে বাঁধের বাইরের প্রায় ৩০০ হেক্টর জমি তলিয়ে গেছে। কিন্তু কৃষকরা বলছেন তলিয়ে যাওয়ার সংখ্যা প্রায় হাজার খানেক। এছাড়াও যেগুলো এখনো তলায় নি কিন্তু পানিতে সেগুলোও কাঁচা কাটলে গো-খাদ্য ছাড়া কিছুই হবে না।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উদ্যোগে খালিয়াজুরীতে ৮৮ টি পিআইসির মাধ্যমে প্রায় ৮১ টি কিলোমিটার বাঁধের জন্য মোট বাজেট ছিলো ১৬ কোটি টাকা। এই ফাটলকৃত কির্তনখোলা বেঁড়িবাঁধের দুইটি ফোল্ডারে চারটি পি আইসির মাধ্যমে প্রায় ৭০ লাখ টাকা ব্যায় হযেছে।