Wednesday, November 13, 2024
মূলপাতানেত্রকোনার সংবাদবারহাট্টা উপজেলানেত্রকোনায় নির্মাকালেই ভেঙ্গে পড়া মডেল মসজিদের গ্রেটবিম রাতের আধাঁরেই সাফ

নেত্রকোনায় নির্মাকালেই ভেঙ্গে পড়া মডেল মসজিদের গ্রেটবিম রাতের আধাঁরেই সাফ

দেশব্যাপী সরকারী মডেল মসজিদ স্থাপন প্রকল্পে নেত্রকোনায় নির্মাণকালেই ভেঙ্গে পড়া গ্রেটবিম রাতারাতি সরিয়ে নেয়ায় এলাকাবাসীর মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভের। নির্মাণকাজে ত্রুটি দেখিয়ে শ্রমিকদের ওপর অভিযোগ তুলে নিজেরাই ভেঙ্গে ফেলেছেন বলে জানান র্নিাহী প্রকৌশলী এবং ঠিকাদারের প্রতিনিধি।

এদিকে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিলে মঙ্গলবার বিকালে পরিদর্শনে গেলেও স্থানীয়দের অভিযোগ কাউকে জিগেস না করেই ঠিকাদারের পক্ষ নিয়েছেন তদন্তকারী দল। এছাড়াও প্রকল্প কমিটির উপ প্রকল্প পরিচালক তদন্তে এসে তিনিও সাফাই গাইলেন ঠিকাদারের। সমালোচনা করলেন সংবাদকর্মীদের।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, সরকারের ৫৬০ মডেল মসজিদ প্রকল্পের আওতায় নেত্রকোনার বারহাট্টায় কোর্ট ভবন এলাকায় সাড়ে ১২ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মান করা হচ্ছে মডেল মসজিদ। গত রবিবার রাতে মসজিদের তিনতলার একটি গ্রেটবিম ধসে পড়লে এলাকাবাসী সহ বিকট শব্দে সবাই চলে যান দেখতে। বিষয়টি কতৃপক্ষকে জানালে তারা রাতারাতি বিমটি ভেঙ্গে সরিয়ে ফেলেন। নিশ্চিহ্ন করে ফেলেন রাতের মধ্যেই।

এদিকে রাতে বিভিন্ন মাধ্যমে ছবি ছড়িয়ে গেলে পরদিন সোমাবার জেলা প্রশাসকের নির্দেশে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিদর্শনে যান। কিন্তু গিয়ে ভেঙ্গে পড়া বিমের কোন চিহ্নই পাননি। এদিকে কাজের নানা অনিয়ম নিয়ে এলাকাবাসী কথা বললেও প্রকৌশল বিভাগ তা গায়ে মাখেনি। কিন্তু তাদরে কথায় গড়মিল থাকায় জেলা প্রশাসন চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। যা মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারী) বিকালে সরেজমিন পরিদর্শন করেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৫ মাসের মেয়াদি কাজের মাঝে বেশ কয়েকবার অর্থাৎ পাঁচ থেকে ছয়টি শ্রমিক দলের বদল হয়ে গেছে। প্রায় তিন বছর হলেও কাজের শেষ নেই অদ্যবধি। গত রোববার বিম ভেঙ্গে পড়ার ঘটনার দিন থেকে কাজ করেছে চট্রগ্রাম থেকে আসা নতুন একটি দল। শেওলা পড়ে থাকা কাজ বাস্তবায়নকৃত সাইনবোর্ডে লিখা রয়েছে ২০১৯ সালের ২৩ এপ্রিল কার্যাদেশ হয়। কিন্তু পরিদর্শনে আসা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জানান ২০২০ এর এপ্রিল মাসে কাজ শুরু হয়। অন্যদিকে সেই হিসেব অনুযায়ীই কাজ শেষ হয়ে পড়ারও প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও বাকী রয়েছে তিন ভাগের পূর্ন এক ভাগ কাজই।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে ঠিকাদার নিন্মমানের কাজ করছেন। প্রকৌশলীর সহায়তায় একটি মসজিদ নির্মাণেও করছে তারা দুর্নীতি। শ্রমিকদেরকেও কম টাকা দেয়ায় কোন রকমে খেয়ে না খেয়ে দোকান বাকী রেখে শ্রমিকরাও চলে যায়। এরপর আবার আনেন নতুন শ্রমিক। এদিকে বাকী দেয়া দোকানদাররাও পাননি টাকা। সেইসাথে ঠিকাদারি ইঞ্জিনিয়ারও বাকী ফেলেছেন অনেক টাকা।

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি (সাইড ইঞ্জনিয়ার) আনোয়ার হোসেন শ্রমিক বদলের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বড় প্রকেল্পে শ্রমিক বদলাতেই হয়। আর টাকা পাওয়ার কথা কে বলেছে সামনে আসতে বলেন তিনি।

বিমটিকে অর্নামেন্সের সাথে তুলনা করে গণপূর্ত বিভাগের নেত্রকোনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসিনুর রহমান তুলে ধরেন নানা যুক্তি। তিনি বলেন, এটি নিয়ম ছাড়া করে ফেলেছিলো তাই ভেঙ্গে নতুন করে করার নির্দেশনা তিনিই দিয়েছেন। এটি ভেঙ্গে পড়েনি ভাঙ্গা হয়েছে।

ঢাকা থেকে আসা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী উপ প্রকল্প পরিচালক শফিকুর রহমান তালুকার বলেন, কেউ যাতে আহত না হন তাই রাতেই সরানো হয়েছে হেলে পড়া বিমটি। তিনি বিষয়টি পজেটিভ রিপোর্ট করারও অনুরোধ করেন। এসময় তিনি বলেন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি হয়েছে।

অন্যদিকে কাউকে না ডেকেই তদন্ত করার বিষয়ে তদন্ত প্রধান কমর্কর্তা বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকদের বলা হয়েছে। কাউকে ডাকতে হয়নি তারা নিজেরাই দেখে উপস্থিত হয়েছেন। তবে তিনি বলেন তদন্ত সমাপ্ত হলে বুঝা যাবে এটি কি হয়েছিলো তখন সে অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেয়ার আশ^াস দেন। তদন্ত প্রধান।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments