কুয়াশা ভরা শীতের সকালে জমিতে ধান রোপনের আগে আগুন পেহাতে বসে নিষিদ্ধ ঘোষিত লড়ি চাপায় প্রাণ গেলো কৃষক এমদাদ মিয়া (৩৫) ও সেলিমের। তারা উভয়েই নেত্রকোনা সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের কাইলাটি গ্রামের বাসিন্দা।
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারী) সকালে নেত্রকোনা মদন সড়কের গ্রামের বাইসতল বন্ধে মজনু মিয়ার দোকানের সামনে একটি বালুবাহী লড়ির চাপায় তারা দুজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো চারজন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত মোস্তফাকে নেয়া হয়েছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গ্রামটিতে চলছে শোকের মাতম।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনা মদন সড়কের বালি নামক স্থানে কালর্ভাটের পাশে রেন্টিতলায় সড়কের অনেক নীচে মজনু মিয়ার দোকান। সেখানে মঙ্গলবার সকালে কুয়াশায় অন্ধকার থাকায় ১০/১১ জন কৃষক ধানের চারা নিয়ে দোকানের সামনেই আগুন পোহাচ্ছিলেন।
এসময় একজন ভ্যান চালকও তাদের সাথে আগুন পোহাতে এসে যোগ দেন। তারা আগুন পোহাবার পাশাপাশি দোকানীকে চা করতে বলেন। হঠাৎ করে নেত্রকোনা থেকে মদনগামী একটি বালু বোঝাই হামজা এন্টারপ্রাইজ নামের লড়িটি ভ্যান সহ উল্টিয়ে সড়ক ছেড়ে দোকানের উপর দিয়ে খালে পড়ে যায়।
দোকানদার মজনু মিয়া জানান, রাস্তা এক দিকে দোকান অন্যদিকে। রাস্তার দিকে লড়ি না গিয়ে কোনাকেণি দোকানের সামনে দিয়ে খালে পড়ে যায়। দ্রুত তিনিসহ স্থানীয়রা এগিয়ে এসে লড়ির নীচে চাপা পড়ে যাওয়া বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করেন। এসময় দুজন ঘটনাস্থলের মারা যান। এরপর মজনু মিয়া নিজেও জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
এদিকে অন্য চারজনকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মডেল থানার পরিদর্শক মো. সাজেদুল আলম জানান, লড়িটি যাওয়ার পথে একটি ভ্যানের সাথে সংঘর্ষ হয়। পরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে যায়। আমরা সুরত হাল রিপোট করছি। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে লড়ি চালককে পাওয়া যায় নি। এদিকে এমন মর্মান্তিক এসকল দুর্ঘটনা রোধে চালকদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানান স্থানীয়রা। তারা বলেন প্রশাসন টাকা খেয়ে এসব নিষিদ্ধ ঘোষিত লড়ি সড়কে চলতে দেয়ায় কদিন পরপর এমন দুর্ঘটনায় প্রাণ যাচ্ছে মানুষের। চালকদের নেই লাইসেন্স। এসকল নিষিদ্ধ লড়ি চলাচল বন্ধ একেবারে করতে দাবী জানান তারা।
আরো বলেন ক্ষতিগ্রস্থদেরকে এখন প্রশাসনের সাহায়তা করা এবং নিজ দ্বায়িত্বে এগুলোর চালক মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্তা নেয়া সময়ের দাবী।