নিজের ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে নেত্রকোনা সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী মেহেনাজ তাবাসসুম উষার মৃত্যু হয়েছে। নবম শ্রেনিতে পড়ুয়া ‘খ’ শাখায় এক রোল নম্বরধারী শিক্ষার্থীর এমন মৃত্যুতে হতবিহ্বল শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ অভিভাবক মহল। বুধবার দুপুরে উষার মৃতদেহ স্কুলমাঠে নিয়ে আসলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। শোকের ছায়া নেমে আসে স্কুলটিতে।
প্রিয় এবং মেধাবী সন্তানকে হারিয়ে শোকের মাতম চলছে পরিবারটিতে। উষার বাবা মা দুজনই স্কুল শিক্ষক। বাবা ইব্রাহীম খলিল কাইলাটি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। মা তাহমিনা আক্তার নেত্রকোনা আদর্শ উচচ বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তাদের গ্রামের বাড়ি সদর উপজেলার মদনপুর গ্রামে হলেও তারা নেত্রকোনা শহরের নাগড়া এলাকায় থাকতেন।
বেসরকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও উষার মায়ের কর্মস্থল আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফুর হায়দার ফকির জানান, করোনাকালে লকডাউনে শিক্ষা প্রতিষ্টান সহ সবকিছু বন্ধ থাকায় গত ঈদুল আযহায় আমাদের স্কুলের শিক্ষক তাহমিনা তার দুই সন্তানসহ গ্রামের বাড়ি মদনপুর যান। এরপর সেখানে গত তিন আগস্ট মেয়েটি ঘরের কুরোর সাথে ওড়ানা দিয়ে ফাঁস টানালে সবাই দ্রæত টের পেয়ে যায়।
পরে তাকে নামিয়ে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে। সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান চিকিৎসক। এক সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে অবস্থার অবনতি হলে গত মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) আইসিইউতে নেয়া হয়। বুধবার (১১ আগস্ট) সকালে মেয়েটি মারা যায়। তবে কি কারনে এমন পথ বেছে নিয়েছে তা কেউ বলতে পারেছনা। তবে ধারনা করা হচ্ছে পড়াশোনা নিয়ে বেশি চিন্তিত ছিলো। স্কুল বন্ধ, পড়া হচ্ছে না এসব নিয়ে বিচলিত থাকতো বলে তার পরিবার জানায়। হতাশার একটি ছাপ পড়ে গিয়েছিলো মেয়েটির মুখে, মনমরা এবং বিষন্ন অবস্থার দিকে যেতে যেতে হয়তো এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
এদিকে সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুল ইসলাম জানান, এই মেয়েটির হাতের লেখা এতো চমৎকার ছিলো যা বলে বুঝাতে পারবোনা। তার আচার আচরণও অনেক সুন্দর ছিলো। এমন একটি অসময়ের মৃত্যুতে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন আমাদের অভিভাবকদের আরো অনেক বেশি সচেতন হতে হবে।