নেত্রকোনা জেলা আধুনিক সদর হাসপাতালে আজো চালু হয়নি সেন্ট্রাল অক্সিজেন। করোনা ইউনিটে ৩৬ টি বেড থাকলেও রোগীদের নিয়ে যেতে হয় ময়মনসিংহে। আর সেখান থেকে অনেকের মধ্যে লাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে এ পর্যন্ত ১০৮ জনকে।
জানা গেছে, গত দুই বছর ধরে করোনা ইউনিট করলেও গত বছর থেকে এবছরের এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ অবস্থায়ই ছিলো। এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনে করোনা ইউনিটের ভুতুরে অবস্থা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর মে মাস থেকে জেলা প্রশাসন ইউনিটটি চালু করার নির্দেশ দেন। সেইসাথে অক্সিজেন স্থাপনের কাজ শরু করে। কিন্তু সেন্ট্রাল অক্সিজেনের কাজ এখনো শেষ হয়নি। ১২ টি সেন্ট্রাল অক্সিজেনের কাজ শুরু করলেও সম্প্রতি ৭ টি অক্সিজেনের তামার তার চুরি হয়ে বন্ধ রয়েছে কাজ।
এমন অবস্থায় করোনা রোগীর স্যাচুরেশন কম নিয়ে আসাদেরকে পাঠিয়ে দিতে হচ্ছে ময়মনসিংহে। তাছাড়াও তিনতলায় সিড়ি বেয়ে উঠতে গিয়ে রোগীদের ভোগন্তি বাড়ে। সম্প্রতি তাগড়া এক যুবক সংস্কৃতি কর্মীর প্রাণ গেলো সিড়ি বেয়ে তিনতলায় ওঠে।
নেত্রকোনা জেলা উদীচীর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান জানান, সম্প্রতি জেলা উদীচীর সাবেক নাট্য বিষয়ক সম্পাদক মাহফুজ আহমেদ সুমন (৩২) তাগড়া এক যুবক করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে সিড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে মারা গেলো। ছেলেটা চট্রগ্রামে চাকুরি করতো। ঈদুল আজহায় বাড়ি এসেছিলো। ঈদের চার পাঁচদিন পরে করোনায় আক্রান্ত হলে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে প্রথমে ট্রলি দিয়ে উঠার পথে উপরে গিয়ে দেখে রাস্তা বন্ধ। পরে আবার ফিরে এসে সিড়ি বেয়ে তিনতলায় ওঠে আর বেঁচে রইলো না। উঠেই না ফেরার দেশে চলে গেলো। এমন অব্যবস্থাপনায় আমরা হারালাম একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র।
এ ব্যাপারে জেলায় অক্সিজেনের কোন সমস্যা নেই দাবী করে সিভিল সার্জন ডাক্তার সেলিম মিয়া চুরির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, থানায় মামলা হয়েছে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাড়ানো হয়েছে নিরপত্তা ব্যাবস্থাও। তবে এই করোনাকালে এমন একটি অমানবিক চুরির সাথে হাসপাাতালের কেউ জড়িত কিনা এই বিষয়েও তদন্ত হচ্ছে বলে জানান তিনি।
হাসপাতালের তত্বাবধায়ক এ এস এম মাহবুবুর রহমান জানান, গত চব্বিশ ঘন্টায় করোনা ইউনিটে রোগী ভর্তি রয়েছে ১৬ জন। এবছর হাসপাতালে কোভিড ইউনিটে মারা গেছেন ৫ জন।