নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাবের নির্ধারিত (২২ মার্চ) অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে আদালতের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রেসক্লাবের সাংবাদিকরা। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা প্রেসক্লাব হল রুমে আয়োজিত এক জরুরী প্রতিবাদ সভায় এ সিদ্ধান্ত নেন সাংবাদিক নেতারা।
প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে জরুরি সভায় সম্পাদক এম মুখলেছুর রহমান খান উপস্থিত সদস্যদের সামনে বিস্তারিত তুলে ধরে মতামত চান। পরে জেলায় কর্মরত সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের মতামতের ভিত্তিতে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, পূর্ব থেকে নির্ধারিত ২২ মার্চ ২০২৩ বুধবার ভোট গ্রহণের কথা থাকলেও নানা অপকর্মসহ বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত কয়েকজন যারা জেলা প্রেসক্লাবে নিষিদ্ধ। নানা অপকর্মের মামলা থাকা চিহ্নিত বেশকজন দুষ্কৃতিকারী ও সাংবাদিক নামধারী ব্যাক্তিরা দীর্ঘদিন ধরেই প্রেসক্লাবের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে নানা অপপ্রচার চালিয়ে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রেসক্লাবে আজীবন নিষিদ্ধ এক সময়ের পত্রিকা পরিবেশকদের দোকান কর্মচারী বর্তামান যায় যায় দিন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার চন্দন চক্রবর্তী নির্বাচনে ভোটার তালিকা সংশোধনীর ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে নির্বাচন স্থগিতে আদালতে আবেদন করেন।
একেবারে সময়ের সাথে লাগোয়া বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টায় নেত্রকোনা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বিচারক মো. আরিফুল ইসলাম উভয়পক্ষের দীর্ঘ সময় শুনানী করেন। পরে বিকেল সাড়ে ৪ টার দিকে জেলা প্রেসক্লাবের নির্বাচন স্থগিতাদেশ দেন।
এ নিয়ে জেলা প্রেসক্লাবের সদস্য ও প্রকৃত সাংবাদিকদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সাংবাদিকরা বলেন, নানা অভিযোগে প্রেসক্লাব থেকে আজীবন নিষিদ্ধ ব্যক্তির আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত কর্তৃক এমন আদেশ কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। সেইসাথে এমন আদেশে দীর্ঘদিনের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানটির মান ক্ষুন্নসহ সকল সদস্যরা সমাজে হেয় হয়েছেন। যার জন্য মানহানিও হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চরম বিভ্রান্তিতে পড়েছেন স্থানীয়রা।
ফরমাইশি এমন রায়ের প্রতিবাদ ও প্রেসক্লাব বিরোধী অপপ্রচারকারীসহ ভিত্তিহীন অভিযোগকারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে বুধবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাংবাদিকরা।
এ সময় প্রতিবাদ সভায় সম্পাদক এম মোখলেছুর রহমান খানের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান, শ্যামলেন্দু পাল, মাহবুবুল কিবরিয়া চৌধুরী হেলিম, সাবেক সদস্য সচিব ও বাসসের সাংবাদিক এম ফখরুল হক, সমকালের খলিলুর রহমান শেখ ইকিবাল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক আলপনা বেগম, চ্যানেল আইয়ের জাহিদ হাসান, এনটিভির ভজন দাস, একুশে টিভির মনোরঞ্জন সরকার, যুগান্তর ও যমুনা টিভিরস্টাফ রিপোর্টার কামাল হোসেন, প্রথম আলোর পল্লব চক্রবর্তী, মাইটিভির আনিসুর রহমান, নিউজ টুয়েন্টিফোরের সোহান আহমেদ, ভোরের ডাক পত্রিকার নাজমুশ শাহাদাত নাজু, এটিএন নিউজের শামীম আহমেদ, চ্যানেল 24 এর হানিফ উল্লাহ আকাশ, একাত্তর টেলিভিশনের সুব্রত সাহা সুমন, মাছরাঙ্গা ড়িভির মীর মনিরুজ্জামান, এটিএন বাংলার জাহাঙ্গীর আলমসহ জেলায় কর্মরত সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সকল সাংবাদিকবৃন্দ।