সোহান আহমেদ:
নেত্রকোনার বারহাট্টায় প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়েরে দশম শ্রেণীর ছাত্রী মুক্তি রাণী বর্মণ বখাটের দায়ের কোপে নিহতের ঘটনায় মর্মাহত বিদ্যালয়ের সহপাঠী, শিক্ষক স্বজনসহ স্থানীয়রা। স্বজন হারানোর শোক কাটিয়ে উঠতে ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা পরিবারটির খোঁজ রেখেছেন। সমবেদনা জানাতে ছুটে গিয়েছেন গ্রামের বাড়ি বারহাট্টা উপজেলার প্রেমনগরে। সেইসাথে নিরাপত্তা সহ সার্বিক খোঁজ রাখছে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু। দিয়েছেন আর্থিক সহায়তা। এর ধারাবাহিকতায় নিহত মুক্তির বড় বোন নিখিল চন্দ্র বর্মনের বড় মেয়ে নিপা রানী বর্মনকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আউটসোর্সিং দপ্তরে চাকুরীর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে মুক্তির মা-বাবা সহ সপরিবারে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আসেন। এ সময় তাদের সাথে নানা আলোচনা ও অভাব অভিযোগ শুনে তাৎক্ষণিক চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেন জেলা প্রশাসক। এ সময় মেয়ে হারানোর শোক কাটিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। ৯ মে মঙ্গলবার থেকেই পরিবারের বড় মেয়ে নিপা রানীর যোগদানের ব্যবস্থা করে জেলা প্রশাসন। অল্প সময়ে চাকুরীর ব্যবস্থায় কিছুটা হলেও আনন্দিত হয়েছে পরিবারটি। এ সময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আশিক নূর, জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মামুন খন্দকার, নেত্রকোনা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ ও জেলা পূজা উদযাপন কমিটির নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। তাৎক্ষণিক পরিবারটির পাশে দাঁড়িয়ে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলে মন্তব্য করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি এডভোকেট সিতাংশু বিকাশ আচার্য্য, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক লিটন পন্ডিতসহ আরো অনেকেই।
মূলত পরিবারটির সচ্ছলতা ও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা চালিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লক্ষ্যে কর্মসংস্থান জরুরি হওয়ায় মুক্তির বাবার সাথে কথা বলে পরিবারের বড় মেয়ে নিপা রানী বর্মনকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ সময় পরিবারের সকলকে হত্যাকান্ডে জড়িত আসামির সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার নিশ্চয়তাও দেয়া হচ্ছে। পরিবারটির সার্বিক নিরাপত্তা ও প্রত্যন্ত গ্রামটির যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নেও উদ্যোগ নেয়া হবে। পাশাপাশি সামাজিক অবক্ষয় ও ইভটিজিং প্রতিরোধেও জেলাব্যাপী কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। উল্লেখ্য, এ ঘটনায় জড়িত একই গ্রামের শামছু মিয়ার ছেলে কাউসার (১৮) কে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ। মূলত প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষিপ্ত হয়েই এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে পুলিশ ও আদালতের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে কাউসার। পরে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।