যৌন নিপিড়নের অভিযোগে বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক আইন উদ্দিন গত সোমবার স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় বারহাট্টা উপজেলার হাজিগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ে ঢুকতে চাইলে শিক্ষার্থী অবিভাবকদের তোপের মুখে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন। পরদিন মঙ্গলবার শিক্ষার্থীদের যৌন-হয়রানীর অভিযোগ ও মামলায় দীর্ঘদিন বরখাস্ত থাকা ওই শিক্ষক আইন উদ্দিনের পুনর্বহাল বাতিলের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। বিদ্যালয়টির বর্তমান ও প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী এবং এলাকাবাসীর ব্যানারে বিকেলে কর্মসূচীটি পালিত হয়।
বুধবার (১৬ র্মাচ) ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন স্কুলের ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি জমিদাতা যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ওমসান গণি তালুকদার। তিনি জানান, টাকা দিয়ে সবখানে ম্যানেজ করে অঅইন উদ্দিন পুনর্বহাল চাইলেও তা হতে দেয়া হবে না।
তার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ রয়েছে এবং সে যে আদেশ দেখিয়ে স্কুলে যেতে চাইছিলো তাতে লিখা ১৫ কার্যদিবসে বিসয়টি স্কুল কমিটি ব্যবস্থা নিবে। কিন্তু সে ১০ দিনেই কি করে পুলিশ নিয়ে যায়।
এটি ইউএনওকে জিজ্ঞেস করেছি। পরে সকলের তোপের মুখে দৌড়ে গিয়ে এসিল্যান্ডের গাড়িতে ওঠে চলে আসে। তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ ছিলো সেটির জন্য সে হাজত খেটেছে।
ওই ঘটনায় জেলার সকল মানুষ সোচ্চার হয়ে পথে নেমেছিলো। এসবের সব রেকর্ড আছে। পরে লুকিয়ে কোন স্বাক্ষ্য প্রমাণ না করিয়ে বিভিণœ জ্য়াগায় টাকা দিয়ে আবারো স্কুলে প্রবেশ করতে চেয়ছিলো। এটি আমাদের জন্য লজ্জা। আমরা প্রয়োজনে আবারো কোর্টের দারস্থ হবো।
এ ব্যাপারে বারহাট্টা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম মাজহারুল ইসলাম বলেন, আইন উদ্দিন আবিট্রেশনের রায় নিয়ে আমার কাছে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। সোমবার সহকারী কমিশনার (ভূমি), একাডেমিক সুপারভাইজার ও পুলিশসহ তিনি বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। তাকে ঢুকতে দেওয়া হয় নাই বলে শুনেছি। শিক্ষার্থীরা না-কি মিছিলও করেছে।
এদিকে বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জানান, বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর আমরা ওই অভিযুক্ত শিক্ষকের পুনর্বহাল বাতিলের দাবীতে অঅবেদন পাঠিয়েছি ১৩ মার্চ। এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ। স্কুলের ইজ্জতের বিষয় এটি।
জানা গেছে, গত চার বছর আগে হাজীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানীর অভিযোগে মামলা হয়। এই মামলায় তিনি কিছুদিন হাজতবাসও করেন। এ অবস্থায় শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক তাঁকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। আইনউদ্দিন অতিরিক্ত টাকাওয়ালা হওয়ায় পরবর্তীতে রহস্যজনক কারণে অভিযোগকারীরা নীরব হয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন সোচ্চার মহলেও একসময় নীরবতা নেমে আসে। পরে শিক্ষা অধিদপ্তর তার বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার করে ও তাকে স্ব-বেতনে কাজে যোগদানের নির্দেশ দেয়।