জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনা ছাড়াই নিয়ম বহির্ভুতভাবে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম শুরুর আভিযোগ উঠেছে নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার সরকারি কৃষ্ণপুর হাজী আলী আকবর কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে ৩৮০০ টাকা নিয়ে রশিদ দিচ্ছে ৩৬০০ টাকার। কর্তৃপক্ষের এমন কান্ডে হতবাক অভিভাবক। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। গত এক সপ্তাহে (৮ আগস্ট) এভাবেই অর্ধশতেরও বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন।
বাংলা বিভাগে ভর্তি হওয়া পিয়াস মিয়া, নাবিদ আকন্দ পিয়াস, রুমান মিয়া, আশরাফুল ইসলাম, ইতিহাস বিভাগের তাহসিন শাওন, মেহেদি হাসান বাবু, কবির মিয়া ও নিলয় মিয়াসহ আরো অনেকেই জানান, কলেজ থেকে ভর্তির জন্য তাগাদা দিচ্ছিল। ৩৮০০ টাকায় ভর্তি হলেও ৩৬০০ টাকার রশিদ দিচ্ছে। বাকি দুইশত টাকা বিভিন্ন কাজে ব্যয় হবে বলে কোন রশিদ দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কলেজের হিসাব রক্ষক সুখেতু সরকার বলেন, দুইশত টাকা ভর্তির যাচাই বাচাই কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চা-পান খরচের (স্কুটিনাইজার) বিল।
কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান খবির খান বলেন, শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থেই এই ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। এর জন্য বিজ্ঞপ্তির প্রয়োজন নেই। প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শেষে এক থেকে দুই সপ্তাহ পর দ্বিতীয় বর্ষের ভর্তি নেওয়া যায়। আমাদের কলেজে ভর্তি হলে এভাবেই হতে হবে। এতে শিক্ষার্থীরা ভতি হলে হবে না হলে নাই।
অধ্যক্ষ প্রভাত চন্দ্র সরকার বলেন, ইউএনও’র সঙ্গে আলোচনা করেই ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। ৩৮০০ টাকা কোনো অতিরিক্ত ভর্তি ফি নয়। অন্যান্য কলেজে ভর্তি ফি আরও বেশি নেয় বলে দাবি করেন তিনি।
খালিয়াজুরী ইউএনও এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাকে শুধু প্রথম বর্ষের ভর্তির বিষয়ে অবগত করেছে। দ্বিতীয় বর্ষের ভর্তি বিষয়ে কিছু জানায়নি। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞপ্তি ছাড়া ভর্তি নেওয়াটা অনিয়ম হবে। তবে শিক্ষার্থী বা অভিভাকদের কারো লিখিত অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে যথাযত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে নেত্রকোনা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা ও গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, অনার্স প্রথম বর্ষ শেষ করে যারা দ্বিতীয় বর্ষে ভর্তি হবে তাদের শুধু অঙ্গীকার নামা নেওয়া হচ্ছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভর্তি নেওয়ার বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি আসলে তারা ভর্তি হতে পারবে। বিজ্ঞপ্তি ছাড়া ভর্তি নেওয়া অনিয়ম হবে।
উল্লেখ্য, গত জুন মাসেও অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ভর্তির জন্য বিভাগের ফেসবুক গ্রুপে হাবিব বাহার নামের এক শিক্ষক লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। পরে সকলে জেনে গেলে আবার ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।