নিজের মেয়েকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশের কাছে আটক হয়েছেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কান্দিউরা ইউনিয়নের কুন্ডলী গ্রামের নির্মান শ্রমিক সন্তোস মিয়া (৫০)। মঙ্গলবার রাতে তাকে নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় সন্তোসের রাজমিস্ত্রী ছেলে বাদী হয়ে পিতাকে আসামী করে থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, মেয়ের জবানবন্দীতে আটক করেছি। মামলাও হয়েছে। তার ভাই বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। বুধবার সকালে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সন্তোসকে কোর্টে পাঠানো হবে। সেইসাথে ধর্ষনের শিকার তার মেয়েকে মেডিকেল পরীক্ষার জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।
এ ব্যাপারে রাতেই মুঠোফোনে মামলার বাদীর সাথে কথা বললে তিনি জানান, তারা তিন ভাই এক বোন। তাদের বাবা সন্তোস মিয়া একজন রাজমিস্ত্রী। তিনি দুই বিয়ে করেছিলেন। প্রথম মায়ের দুই ছেলে ও দ্বিতীয় মায়ের এক ছেলে এক মেয়ে। কাজ করার সুবাদে তারা সকলেই ঢাকার গাজীপুরে থাকতেন। মা গার্মেন্টস কর্মী ও বাবা রাজমিস্ত্রী এবং এক ভাই সিএনজি চালক। বাদী নিজেও রাজমিস্ত্রী। বোনটি কিশোরী। সকলেই শ্রমিক হওয়ায় বোন বাসায় একাই থাকতো। সেই সুযোগে নানা ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে দেখিয়ে তাদের বাবা দীর্ঘদিন ধরে যৌন হয়রানীসহ ধর্ষণ করে আসছিলো। কিন্তু বাবা হওয়ার সুবাদে লজ্জায় বোনটি বলতেও পারেনি। কাজ করতে গিয়ে এক্সিডেন্টে বাবার পায়ে রড লাগানোর পর থেকে গত কুরবানী ঈদে স্বপরিবারে নিজ গ্রামে নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় চলে এসেছি।
কিন্তু এখানে এসেও গত ১১ এপ্রিল রাতে আনুমানিক সাড়ে ৯ টার দিকে তার বোনকে দোকানে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে বাড়ির উত্তর পাশের চাচাতো ভাইদের বাড়ির ডোবার এখানে ধানক্ষেতে নিয়ে খুন করার ভয় দেখিয়ে ধর্ষন করে। পরে বোনটি বাড়ি এসে আত্মহত্যা করবে এমন কথা বলে আমাদের কাছে কান্না করে। ঘটনা শুনে আমাদের বাবা বলে কোন ব্যবস্থা নিতে পারছিলাম না।
এ নিয়ে সবাইকে জানিয়ে দেবে বললে মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বাবা বোনটিকে বেধড়ক মারধর করেন। এসময় আমার বোন পালিয়ে চলে যায় থানায়। তার সাথে আমরাও গিয়ে বিষয়টি পুলিশকে অবগত করলে রাতেই পুলিশ বাবাকে বাড়ি থেকে আটক করে। এমন লজ্জাজনক ঘটনার কথা বলতেও যেনো বারবার কেঁপে ওঠছিলো অসহায় ভাইটির ঠোঁট। তিনি বলেন আজ মেয়ের সাথে এটি করেছে আমার স্ত্রীর সাথেও তো করতে পারতো। একে বাবা বলতেও ঘৃণা হচ্ছে।