হাওর থেকে বোরো ধান নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে শ্যালো ইঞ্জিনচালিত হ্যান্ডট্রলি জ্যামে আটকে যাওয়ায় মেজাজ হারিয়ে অপর গাড়ির চালককে মারধরের ঘটনায় গ্রামের দুই মহল্লাবাসীর মধ্যে সৃষ্ট সংঘর্ষে ১৭ জন আহত হয়েছেন। সোমবার বেলা ১১ টায় নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রামের বাঘাপাড়া ও পশ্চিমপাড়া মহল্লাবাসীদের মাঝে এই সংঘর্ষ হয়।
এ ঘটনায় উভয় মহল্লারই ১৭ জন আহত হলে তাদেরকে মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়। সংঘর্ষের পূর্বে সড়কে জ্যাম নিয়ে কথা কাটাকাটির পশ্চিমপাড়ার অপু নামে এক ব্যক্তি বাঘাপাড়ার চালক মাসুম মিয়াকে মারধর করেন। পরে দুই মহল্লাবাসী একত্র হয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে সংঘর্ষ থামালে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। এ সময় পুলিশ স্থানীয়দের সহায়তায় দু’পক্ষের আহতের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন, তেুতলিয়া গ্রামের বাঘাপাড়ার সোহেল মিয়া (৩৫), এরশাদ মিয়া (৩২), রেহান মিয়া (৪৫), সুলতান মিয়া (৩০), শাহীন মিয়া (৪৩), শামীম মিয়া (৪৫), জাহাঙ্গীর মিয়া (২৯), হাকিম মিয়া( ৪৬), আবের মা (৭৫), আয়েশা আক্তার ( (৪৫), দারগআলী (৫২), বাবুল মিয়া (৩৮), কাজল মিয়া (৩২)। আর পশ্চিমপাড়ার অপু মিয়া(২৫), আনু মিয়া (২৪), মেহেদি হাছান ইদ্রিসী (৫৫) ও মাজু মিয়া (২৫) ।
মোহনগঞ্জ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্মরত মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট মো. শহীদউল্লাহ জানান, আমরা ১৭ জনকে চিকিৎসা দিয়েছি। অনেকই মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পেয়েছেন। তাদের অনেকরেই এক্সরে করতে দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে যাদের ভর্তি করা দরকার ভর্তি করা হবে। তবে হাসপাতালে প্রথম চালককে মারধরকারী অপু গ্রুপের কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের আঘাত সামান্য হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সবাই বাড়ি চলে গেছেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রোববার সন্ধ্যায় তেুতলিয়া গ্রামের পশ্চিমপাড়ার অপু মিয়া (২৫) হ্যান্ডট্রলিতে করে হাওর থেকে বোরো ধান নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন পথে গ্রামের বাঘাপাড়ায় তার হ্যান্ডট্রলিটি জ্যামে আটকে যায়। এ সময় মেজাজ হারিয়ে জ্যামে আটকা অপর ট্রলির চালক বাঘাপাড়ার সুমন মিয়াকে লাথি সহ মারধর করে। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সামান্য হাতাহাতিও হয়। পরে ঘটনা মিটমাট হয়ে সবাই বাড়ি চলে যায়।
ওই ঘটনার জেরে সোমবার সকালে অপু মিয়া তার লোকজনসহ দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাঘাপাড়ায় বাড়িঘর ও ধানের আড়তে অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের রামদার আঘাতে ও ইটপাটকেলে কয়েকটি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ হামলায় আহত হয় ১৩ জন। এ সব তথ্য জানিয়ে বাঘাপাড়ার মালেক মিয়া, হাসেম মিয়াসহ অন্যরা জানায়, সকালে অপু তার লোকজন দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। আমাদের লোকজন তখন হাওরে ধান কাটছিল। আমরা প্রাণ বাঁচাতে শুধু প্রতিহত করেছি। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানায় তারা। তবে অপর পক্ষের অপুর মামা মো. শহীদুল ইসলামসহ অন্যরা জানান, অকারণে আমার ভাগ্নেকে মারধর করায় এ ঘটনা ঘটেছে। তবে ওই পাড়ার লোকজনই আমাদের ওপরে আগে হামলা করেছে।
এ বিষয়ে মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল আহাদ খান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। তবে এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে সে অনুযায়ী যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।