জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসন আয়োজিত ‘শতবর্ষে শত অনুষ্ঠান’ কর্মসূচির প্রতিদিন চলছে সম্প্রচার। জেলা শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় প্রতিদিনি সন্ধ্যা সাতটায় জেলা প্রশাসকের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজ থেকে অনুষ্টান সম্প্রচার করা হচ্ছে।
এ উপলক্ষে গত ৫ ডিসেম্বর রাত আটটায় এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে। ৭ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে আগামী ১৭ মাচ পর্যন্ত ১শ দিনব্যাপী এসব অনুষ্ঠান ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে প্রচার করা।
করোনার মহামারিতে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে জেলা প্রশাসক কাজি আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে শত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’র প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার। তিনি বক্তব্যে বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন কৃষকের, শ্রমিকের, শোষিতের এবং বঞ্চিতদের নেতা। তিনি সকল দিক থেকে একজন শ্রেষ্ঠ বাঙালী। তিনি কোনোভাবেই পাকিস্থানী শাসকগোষ্ঠীর সঙ্গে আপস করেননি। বঙ্গবন্ধুর এই নীতি ও আদর্শ অনুসরণ করা আমাদের প্রত্যেকের কর্তব্য।
এসময় অনুষ্ঠানে সরাসরি নেত্রকোনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু। তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শই পারে অসাম্প্রদায়িক চেতনার সমাজ গঠন। ছাত্রলীগ করে ছাত্রজীবনে অত্যন্ত কাছে থেকে দেখেছি। সহজ সরল মানুষকে ভালোবাসাই যার ছিলো মূলমন্ত্র। আর সেটি করতে গেলে মানুষকে জন মানুষের নেতা হতে হয়। তিনি জনমানুষের নেতা ছিলেন। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি সাহিত্য সংস্কৃতি নিয়ে ভাবতেন। এটিও রাজনীতির একটি অংশ। সুস্থ ধারার সংস্কৃতি চর্চা মানুষের বিবেককে জাগ্রত করে। আর সেটির ধারবাহিকতা বজায় রেখে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়েত আমাদের নতুন প্রজন্মকে সোনার মানুষ করে গড়ে তুলতে হবে। সেজন্য সাহিত্য সংস্কৃতি চর্চার বিকল্প নেই। এটি জেলা প্রশাসকের একটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ বলেও তিনি জানান। আর এই উদ্যোগের মধ্য দিয়েই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে সবার সামনে তুলে ধরা যাবে।
এসময় অন্যানের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মো. আকবর আলী মুনসী, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তফসীর উদ্দিন খান, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল আমীন, মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সম্পাদক গাজী মোজাম্মেল হক টুকুসহ সংবাদকর্মীও অন্যান্যরা।
এছাড়াও ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে আরো বক্তব্য রাখেন, ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. কামরুল হাসান এনডিসি, স্বাধীনতা পুরস্কার প্রাপ্ত প্রাবন্ধিক অধ্যাপক যতীন সরকার, শেখ হাসিনা বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি ড. মো. রফিক উল্লাহ, কেন্দুয়া আটপাড়া আসনের এমপি অসীম কুমার উকিল, সংরক্ষিত আসনের এমপি জাকিয়া পারভীন মণি, সহ অনেকেই।
জেলা প্রশাসক কাজি আবদুর রহমান জানান, সংস্কৃতি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ উক্তি “সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা ছাড়া রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্থহীন। তাই মাটি ও মানুষকে কেন্দ্র করে গণ মানুষের সুখ শান্তি ও স্বপ্ন এবং আশা আকাঙ্খাকে অবলম্বন করে গড়ে উঠবে বাংলার নিজস্ব সাহিত্য-সংস্কৃতি।”
আর বঙ্গবন্ধুর এই সাহিত্য সংস্কৃতি প্রীতিকে সম্মান জানানো ও বর্তমান প্রজন্মের চিন্তা চেতনা, মননে সংস্কৃতি প্রীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাঁর জন্মশতবার্ষিকীতে আমরা এই উদ্যোগ নিয়েছি।
নেত্রকোনার সকল সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠনের পরিবেশনায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় এই শত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে করে স্থানীয় সংস্কৃতি কর্মীরাও তাদেরকে প্রকাশ করতে পারবে। প্রতিটি উপজেলার বিভিন্ন সংগঠন বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে অনেক কিছু জানতে পারছে। তাদের চর্চাটাও করতে পারেছ। সেইসাথে নিজেদের নিজস্ব সংস্কৃতিগুলো তুলে ধরার একটা প্লাটফরম পাচ্ছে। পাশাপাশি করোনকালে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশু কিশোররা একটা বিনোদন পাচ্ছে। অনালাইনে অনুষ্টান সম্প্রচার কারয় ঘরে বসেই দেখতে পারবে। এছাড়াও সংস্কৃতি চর্চাটা চারদিকে ছড়িয়ে যাবে। এ নিয়ে ্ওই দিনই দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনও করে প্রশাসন।