ডাক্তার জয়ন্তী রানীকে আপনারা চিনেননি। চিনে না থাকলে আজকেই চিনে নেন।
“আমি কোন স্বাভাবিক মহিলা না, আমার স্বামীর ছোট ভাই ডিআইজি। পুলিশ আমাকে এগিয়ে দিয়ে আসে নিয়ে আসে। সব সাংবাদিকদের আমার চেনা আছে। সাংবাদিকরা আমার বা** ছি*ড়েবে। সাংবাদিকদের আমি দেখে নিব। দুর্গাপুর সব পান বিক্রেতা সাংবাদিক।”
এভাবেই নেত্রকোনার দুর্গাপুরের সাংবাদিকদের অশালীন ও অকথ্য ভাষায় গালাগালি করলেন ডাক্তার জয়ন্তী রানী ধর।
একপর্যায়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকিও দেন তিনি।
যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও চিত্র ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী ও স্বজনের সাথে অশালীন মূলক আচরণের একপর্যায়ে কারণ জানতে চাইলে সাংবাদিকদের প্রতি ক্ষিপ্ত হন তিনি।
এ সময় সাংবাদিকদের সামনেই রোগীর ব্যবস্থাপত্র ছিড়ে ফেলেন ডাক্তার জয়ন্তী রানী ধর।
রোগী ও স্বজন সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার বিকেলে সাত মাসের অন্তসত্তা স্ত্রীকে নিয়ে ডাক্তার জয়ন্তী রানীর কাছে যান দুর্গাপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মোঃ জামাল তালুকদার।
চেম্বারে দূর থেকে রোগী দেখার সময় রোগীর স্বজনরা কাছ থেকে রোগী দেখার কথা বলতেই ক্ষিপ্ত হন ডাক্তার জয়ন্তী রানী।
একপর্যায়ে চেম্বার থেকে বের হয়ে আসতে বাধ্য হন স্বজনরা।
তাৎক্ষণিক স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিক তার চেম্বারে প্রবেশ করতেই রীতিমতো তিনি চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে দেন।
এ সময় তার স্বামী মন্ত্রীর কাছের লোক বলেও সাংবাদিকদের ভয় দেখাতে শুরু করেন।
এছাড়াও তার স্বামীর ছোট ভাই ডিআইজি বলেও সাংবাদিকদের হুমকি দেন।সাংবাদিকদের পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দেন তিনি। যদিও কোন পুলিশ যায়নি সেখানে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও চিত্রে দেখা যায় ডাক্তার জয়ন্তী রানী ধর তার ব্যক্তিগত চেম্বারে বসে সাংবাদিকদের সাথে চিৎকার চেঁচামেচি করছেন।
বারবার অশালীন ভাষায় কথা ও গালাগালিও করতে দেখা যায় ওই ভিডিওতে।
চেম্বারে বসেই সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন সাংবাদিকরা আমার বা** ছি*ড়েবে।
দুর্গাপুরের সব সাংবাদিকদের আমার চেনা আছে।
এর আগেও ময়মনসিংহে কেউ কিছু করতে পারেনি।
ডাক্তার জয়ন্তী রানীকে আপনারা চিনেন নি আমি তিন মাস থেকে ময়মনসিং থেকে চলে গেছি।
যা আর কেউ পারেনি। আপনারা আমার চেম্বারে আসার সাহস পেয়েছেন কোথা থেকে। আমি এখনই ডিইজিকে ফোন দিচ্ছি।
একসময় ডাক্তার জয়ন্তী রানী ধর দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মেডিকেল অফিসার হিসেবে থাকলেও বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি সরকারি হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
প্রতি শুক্রবার তিনি ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গাইনি চিকিৎসক হিসেবে রোগী দেখেন। জনপ্রতি তিনি ভিজিট নেন হাজার টাকা।
দেশের যে প্রান্তেই থাকেন না কেনো গেল নয় বছর ধরে ছুটির দিনগুলোতে শুধু দুর্গাপুরে রোগী দেখতে আসেন। যদিও দুর্গাপুরে কেউ আসতে চায় না বালুর ট্রাকের ভয়ে।
পাশাপাশি আরেকটি এনজিও (ডিএসকে) হাসপাতালে নিয়মিত সিজারও করেন তিনি। সুদূর ঢাকা থেকে তিনি এই চেম্বার করতে আসেন।
এদিকে স্থানীয়রা জানান ডাক্তার জয়ন্তী রানী ধর অন্তঃসত্তা নারীদের জন্য রীতিমতো এক আতঙ্কের নাম।
নিয়মিতই রোগীদের সাথে অশালীনভাবে গালমন্দসহ খারাপ আচরণ করতে দেখা যায়। এ যেন তার প্রতিমুহূর্তের চিত্র। রোগীদেরকে দেখেন মৃত দেহ যেমন দূরে থেকে দেখে ঠিক তেমন করে।
ভালো কোন গাইনি চিকিৎসক না থাকায় বাধ্য হয়ে অন্তঃসত্ত্বা নারীরা তার কাছেই যান।
অভিযোগ রয়েছে নানা সময় চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা করে আসছেন তিনি। সিজারিয়ান অপারেশন করতে গিয়ে রোগী ও নবজাতক হত্যার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। যদিও অনেক গুলো মীমাংসা হয়ে পড়েছে শেষে।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ১২ আগষ্ট শুক্রবার সিজারিয়ান অপারেশনের পরপরই এক প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে জয়ন্তী রাণী ধরের বিরুদ্ধে।
এর পর তিনি এক লক্ষ টাকা দিয়ে তা মিমাংসাও করেন। নিহত প্রসূতি চম্পা আক্তার দুর্গাপুর উপজেলার গাওকান্দিয়া ইউনিয়নের ফুরকান মিয়ার স্ত্রী।
এছাড়াও এই রকম অভিযোগ অহরহই উঠে আসছে।
কিন্তু তিনি শক্তি ধর হওয়ায় রোগীর কেউ তার বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস পায় না।