Saturday, May 4, 2024
মূলপাতানেত্রকোনার সংবাদনেত্রকোনা সদর উপজেলাজীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ

জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে মানুষ

নাড়ির টানে বাড়ি ফেরে একদিনের ঈদ আনন্দ গায়ে মেখে হাতের মুঠোয় জীবন নিয়ে কর্মস্থলে ফিরছে নিন্ম আয়ের মানুষেরা। বাস ভাড়া বেশি থাকায় তপ্ত রোদে মালবাহী ট্রাকের যাত্রী হয়ে ফিরছেন শিশু বৃদ্ধ বয়েসের নারী পুরুষেরা। ঝুঁকির কথা স্বীকার করে ট্রাক চালকরাও বলছেন অসহায় মানুষদের কর্মস্থলে পৌঁছাতে ঝুঁকি নিয়েই নিয়ে যাচ্ছেন তারাও। দিনভর বাসের টিকিটের জন্য অপেক্ষা করছেন বন্যা কবলিত জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা কর্মস্থলে ফেরা মানুষগুলো।

নেত্রকোনা আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, শ্রাবণের সুনীল আকাশের নীচে রোদের প্রখরতায় ঘাম বেয়ে পড়ছে মাটিতে। এরই মাঝে ঈদুল আজহার ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরছেন নাসিমা আক্তার দম্পতি। কলমাকান্দার সিধলী গ্রামের বাড়িতে রেখে যাওয়া সন্তান ও স্বজনদের সাথে ঈদ করতে এসেছিলেন। দুজনেই চাকরি করেন গার্মেন্টসে। হাজার দশেক টাকায় বেতনে। বাড়ি আসার সময় পিকাপ ভ্যানে ৩০০ টাকা ভাড়ায় এসে ট্রাকে যাচ্ছেন ২০০ টাকা করে। অর্ধেক বেতন অফিসে রয়ে গেছে। চাকরি বাঁচাতে হলেও যেতে হবে।

তেমনি ৭০ বছর বয়সী জুলেখাও যাচ্ছন মেয়ের সাথে। নাতি নাতনি দেখে রাখেন। কোন রকমে ছেলে মেয়েদের হাত ধরে টাকে উঠলেও রোদের জ্বালায় বারবার মুছে যাচ্ছিলেন ঘাম। এমন অনেকেই বলছেন কর্ম বাঁচাতেই ফেরার এই যুদ্ধ। ইব্রাহীম নামের এক যাত্রী বলেন, এই গরমে স্ট্রোক করার মতো অবস্থা জেনেও ট্রাকে উঠেছেন তারা। ঈদে বাড়ি এসে সব টাকা শেষ কোন রকমে কর্মস্থলে গেলেই হলো।

এদিকে এক একটি ট্রাক বোঝাই করে দিলে শ্রমিক রফিকুল মিয়ার মতো ৫ থেকে ৭ জন ১০০০ টাকা পর্যন্ত পাবেন। তাই গাজীপুর চৌরাস্তা ডেকে ডেকে ২০০ টাকা জনপ্রতি যাত্রী তুলে দিচ্ছেন। বাসের টিকিট না পেয়ে ঝুঁকি এবং কষ্ট মাথায় নিয়েই হাসি মুখে ফিরছেন অনেকেই। এদিকে টিকিট কাউন্টারে টিকিট না পেলেও বাইরে থেকে বেশি দামে টিকিট নিয়ে অনেকেই চলে যেতে পারেলও বিপাকে অধিকাংশ মানুষ।

কাউন্টার বন্ধ রেখে বাইরে ৫/৬ শ করে টিকিট বিক্রি করছে গেইটলকসহ বিভিন্ন বাসের। তিন থেকে চারঘন্টা ধরে অপেক্ষা শেষে ঠেলাঠেলি করে কেউ কেউ নিচ্ছেন টিকিট। বিড়ম্বনার যেন শেষ নেই। বেশি দরে টিকিট পাওয়া যাত্রীরা মুখ না খুললেও ভোগান্তির শিকার মানুষগুলো কষ্ট নিয়ে করছেন অভিযোগ। বাধ্য হয়ে অনেকেই যাচ্ছেন ট্রাক এবং পিকাপ ভ্যানে। এদিকে বাস চালক জামাল উদ্দিন এবং টিকিট মাস্টার আব্দুর রউফ জ্যামের দোহাই দিয়ে সরকার নির্ধারনের চেয়ে কম টাকায় টিকিট বিক্রি করছেন বলে জানান। শাহজালাল এন্টারপ্রাইজ কাউন্টারের টিকিট মাস্টার আব্দুর রউফ বলেন কাউন্ট্রারের বাইরে কে কত টাকায় বিক্রি করছে তা জানেন না তারা। তবে এখানে স্বাভাবিক সময়ে ত্তিনশ টাকা এবং এখন তিনশ পঞ্চাশ করে নিচ্ছেন এই যা।

তবে জেলা মটরযান কর্মচারী ইউনিয়নের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান আন্তজেলা বাস টার্মিনালের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা মো. সাদেক মিয়া জানান, এক টাকাও বেশি নেয়া হচ্ছেনা। যে করেই হোক শনিবার অফিস করাতে নুষজনকে ঢাকা পৌঁছানের কথা জানালেন তিনি। প্রয়োজনে ঢাকা থেকে বাস আনিয়ে পাঠানো হবে এসকল যাত্রী।

আন্তজেলা বাস টার্মিনাল সূত্রে জানা গেছে, ঈদ উপলেক্ষে ১০০ যাত্রীবাহি বাস চলাচল করছে নেত্রকোনা ঢাকা সড়কে। তার মধ্যে শাহজালাল ৫০ টি এবং গ্রীণ লাইন সহ অন্যান্য গেইটলক ৫০ টি। এছাড়াও ৭০ টি লোকাল বাস চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে দিনভর অর্ধ শতাধিক ট্রাক যাচ্ছে শত শত যাত্রী বোঝাই করে ছেড়ে যায় নেত্রকোনা।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments