দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গত ৭ জানুয়ারী ভোটে নেত্রকোনায় এবার সহকারী প্রিজাইডিংয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন নেত্রকোনা সরকারী কলেজের অনার্সের চতুর্থ বর্ষের নাইম মিয়া নামের এক শিক্ষার্থী। তিনি নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার অধ্যাপক আবু তাহের খান কলেজের প্রভাষক পরিচয়ে এই দায়িত্ব পালন করেন। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শাণোর চিঠি (শোকজ) দিয়েছে প্রশাসন।
এ ব্যাপারে নির্বাচনী প্রিজাইডিং অফিসারদের নাম ঠিকানা কেন্দ্র তালিকায় দেয়া মোবাইল ফোনে জানতে ফোন দিলে কথা বলেই অধ্যাপক কিনা জানতে চাইতেই কলটি কেটে দেন।
জানা গেছে, এই কলেজের ১৪ জন এ বছর নির্বাচনে ভোট গ্রহণের কাজ করেছেন। তারমধ্যে ১৫৭ নং সংসদীয় আসন নেত্রকোনা ১ আসনের ১১১ নং ভোট কেন্দ্র পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় কলমাকন্দায় সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন (৫) নাইম মিয়া। প্রভাষক আবু তাহের খান কলেজের পরিচয়ে। তার সাথে আরও এক কলেজ শিক্ষার্থী আল আমিন নামের একজনের নাম রয়েছে তালিকায়।
এ নিয়ে এলাকায় শুরু হয়েছে আলোচনা সমালোচনা। সমালোচনা শুরু হয়েছে নির্বাচনের দায়িত্ব পালনকারী রিটানিং সহকারী রিটানিংদের বিরুদ্ধেও।
স্থানীয়ভাবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নেত্রকোনা সরকারী কলেজের অনার্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র নাইম মিয়া। আল আমিনও অন্য একটি কলেজে অধ্যায়নরত। তারা দুজন পড়াশোনার ফাঁকে অধ্যাপক আবু তাহের খান কলেজের ক্লাশ নেন। শিক্ষার্থী হয়েও অন্য শিক্ষার্থীদের পড়ান।
স্থানীয়রা জানান প্রভাষক পরিচয়ে সহকারী প্রিজাইডিং পদে দায়িত্ব পালন করা মো. নাইম মিয়া বারহাট্টা উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের ধলপুর গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি নেত্রকোনা সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। কলমাকান্দার দক্ষিণ কান্দাপাড়া গ্রামে মামার বাড়িতে থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি অধ্যাপক আবু তাহের খান কলেজে তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ে ক্লাস নিয়ে থাকেন।
৭৫৬০ নং কোডধারী কলমাকান্দার কৈলাটী ইউনিয়নের বেলতলী গ্রামে অবস্থিত অধ্যাপক আবু তাহের খান কলেজের অধ্যক্ষ একেএম আব্দুল হামিদের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও ফোনটি রিসিভ করেননি। এ ব্যাপারে কথা বলতে কলেজের কারো ফোনে কল দিয়ে কথা বলা সম্ভব হয় নি।
তবে কলমাকান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানের সাথেও কথা বললে তিনি জানান, সকল প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা তালিকা দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী আমরা ২ জানুয়ারী জেলা প্রশাসক স্যারের স্বাক্ষরের পর ৩ জানুয়ারী নিয়োগপত্র দিয়ে দেয়া হয়েছে। এরপরও কয়েকদিন সময় ছিলো কেউ অভিযোগ দিলে বা জানালে আগেই ব্যাবস্থা নেয়া যেতো। কেউ জানায়নি।
তিনি আরও জানান, প্রিন্সিপালকে আমরা শোকজ নোটিশ দিয়েছি। এর জবাব দিদলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রতিষ্ঠান প্রধানের এমন কাজ ঠিক হয়নি বলেও তিনি জানান।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা জানান, প্রতিষ্ঠান প্রধানের দেয়া তালিকা অনুযায়ী নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যদি সত্যতা থাকে প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।