হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্বাক্ষরিত আটটি ছাড়পত্র অনুযায়ী কাবিখা প্রকল্পের ১৭.৬৯৫ মেট্রিকটন চাল পাচারকালে জব্দ করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় খালিয়াজুরী এসিল্যান্ড কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালতে আটক চাল বহনকারী ব্যাক্তিকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে দুই সপ্তাহের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে খারিয়াজুরী উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে নেত্রকোনায় নিয়ে আসার পথে রসুলপুর ধনূ নদী পার হওয়ার সময় প্রথমে স্থানীয়রা আটক করে পরে পুলিশে খবর দেয়।
এ ঘটনায় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সামিন সারওয়ার মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে চাল নিয়ে যাওয়া নেত্রকোনা সদরের চল্লিশা রাবেয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধিকারী মো. লুৎফর রহমানকে ৫০ হাজার টাকা অর্থ দন্ড করেন। এসময় সাজাপ্রাপ্ত মো. লুৎফর রহমান এক লিখিত প্রত্যায়নে উল্লেখ করেন ৩৫৪ বস্তা চাল খালিয়াজুরী খাদ্য গুদাম থেকে তুলেছেন।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রব্বানী জব্বারের দেয়া কৃষি ব্যাংকের এক্টিভ মালিটিমিডিয়া নামীয় একাউন্টে নগদ তিন লক্ষ টাকা জমা দিযেছে। পরে ১৪ এপ্রিল এ সকল চাল উত্তোলন করে দুই লড়িতে নিয়ে আসার সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে বলে তিনি লিখিতভাবে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছেন।
এদিকে হাতে আসা ইএনও স্বাক্ষরিত ছাড়পত্র, পুলিশ, প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্প সভাপতি মোহাম্মদ কবির হোসেন নামের ২.৯২৫ মেট্রিক টন চাল ২২ মার্চে ও একই নামে মো. কবির হোসেন নামে আরও একটির ২ মে. চাল গত ১৬ জানুয়ারীতে ছাড় হয়। অন্যেিদক ২২ মার্চে মো. শামীম মিয়া নামে ২.৩ মে.টন চাল ছাড় হয়। নমিতা রানী নামে ১.১৫ মে. টন চাল ২২ মার্চে ছাড় হয়। শিউলি ভৌমিক নামে একটি প্রকল্পের ৩ মে.টন চাল গত ১৩ মার্চ ছাড় হয়। একই নামের ২৩ মার্চে ২.৫ মে. টন ও ১৬ জানুয়ারি ২.৫ মে. চাল ছাড় হয়। মো. জাহাঙ্গীর নামে ১.৩ মে. টন চাল গত ২০ মার্চে ছাড় হয়।
জানা গেছে, প্রকল্পের সভাপতিদের মধ্যে কৃষ্ণপুর আব্দুল জব্বার রাবেয়া খাতুন বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. হুমায়ুন কবির ও অপর একটি স্কুলের শিক্ষক তিন ছাড়পত্রের সভাপতি শিউলি ভৌমিক। এছাড়া শামীম মিয়া, জাহাঙ্গীর ও নমিতা রানী ইউপি সদস্য। অন্যােিদক তিন লক্ষ টাকা নেয়া ব্যাংক হিসাবধারী এক্টিভ মাল্টিমিডিয়ার সুজন তালুকদার কৃষ্ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউডিসি (ডিজিটাল উদ্যোক্তা) ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রব্বানী জব্বারের ভাতিজা। প্রকল্প বাস্তবায়নকারী কর্মকর্তা রাজীব আহমেদসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুয়েল সাংমা স্বাক্ষরিত ছাড়পত্র গুলোর বিপরীতে জব্দকৃত সাড়ে ১৭ মেট্রিক্স টন চাল।
কিন্তু এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউএনও রুয়েল সাংমা ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন টিআরের চাল। মোবাইল কোর্ট করেছে এসিল্যান্ড আটক করেছে ওসি। উনাদের জিজ্ঞেস করার কথা বলেন। কিন্তু তার স্বাক্ষরিত এসকল ছারপত্র গুলোর কথা জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দেন।
পরে মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী খালিয়াজুরী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সামিন সারওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমরা রাতেই চাল জব্দ করে নদীর পাড়েই রাখি। সেখান থেকে সকালে থানায় নেয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে খালিয়াজুরী থানার ওসি আবুল বাশার জানান, ৩৫৪ বস্তার কথা বললেও নদীর পাড়ে খুলে গেছে কিছু নষ্ট হয়েছে। মোবাইল কোর্ট করেছে উপজেলা প্রশাসন। কোথা থেকে কিভাবে চাল নিচ্ছে এগুলো তারা বলতে পারবে। আমরা শুধু আটকের দায়িত্ব পালন করছি মাত্র।