Thursday, May 16, 2024
মূলপাতানেত্রকোনার সংবাদখালিয়াজুরী উপজেলানেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে বাঁধে ফাটল আতঙ্কে কাঁচা ধান কাটছেন কৃষকরা

নেত্রকোনার খালিয়াজুরীতে বাঁধে ফাটল আতঙ্কে কাঁচা ধান কাটছেন কৃষকরা

সোহান আহমেদ:
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ধনু নদসহ বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে এইর মধ্যে নেত্রকোনার খালিয়াজুরীর সবচেয়ে বড় বাধ কীর্তনখোলার বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। এমতাবস্থায় ফসল রক্ষায় দিনরাত এক করেই স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি কাঠছেন কৃষকরা। যদিও এতে সহযোগিতা করছে জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিসহ হাওর অঞ্চলের শত শত কৃষকরা। এমন আতঙ্কের মাঝে কাঁচা ধান কাটতেই মাঠে নেমেছেন কৃষকেরা। তারা বলছেন যে কোন সময় বাঁধ ভেঙ্গে তলিয়ে যেতে পারে দেনার টাকায় কষ্টে ফলানো ফসল। তাই পরিপক্ষ হওয়ার আগেই কাঁচা ধানই কাঠছেন কৃষকরা।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে পানি বৃদ্ধির গতি বেরে যাওয়ায় মঙ্গলবার সকালে খালিয়াজুরী উপজেলার অতিগুরুত্ব কির্তনখোলা বাঁধের বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দেয়। খবর পেয়ে স্থানীয় কৃষকরা গেল দুদিন ধরে খেয়ে না খেয়ে মাটি ও বাঁশ সংগ্রহ করে বাঁধ মেরামতে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করছেন।

এ সময় অসংখ্য বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা অভিযোগ করেন, প্রতিবছর হাওরের ফসল রক্ষায় কোটি কোটি টাকা বরাদ্ধ দেয় সরকার। কিন্ত পিআইসি গঠনে উপজেলা প্রশাসনের অনিয়মের ফলেই বাঁধগুলো এমন হুমকিতে পরেছে।

হাওর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বাধের কাজে স্থানীয় কৃষকদের সম্পৃক্ত না করে অন্য এলাকার জনপ্রতিনিধিসহ নেতাকর্মীদের দিয়ে পিআইসি গঠন করেছে খালিয়াজুরী উপজেলা প্রশসন। পরবর্তীতে পিঅইসিরা একজন অন্যজনের কাছে বিক্রি করে দেয়ার ফলে সঠিক ভাবে কাজ হয়নি। বাঁধের পাশ থেকেই মাটি তুলে নির্মান হয়েছে। যার ফলেই পানির ধাক্কায় এমন ফাটলের সৃষ্টি হয়েছে। তাই আগামীতে গুরুত্বপূর্ণ বাঁধগুলো স্থায়ীভাবে নির্মানের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।

এদিকে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আবদুর রহমানের নেতৃত্বে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফখরুজ্জামান জুয়েল, কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এফ এম মোবারক আলী, খালিয়াজুরী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এইচ এম আরিফুল ইসলামসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও শতশত কৃষকরা বাঁশ, চাটি, বালির বস্তাসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে বাঁধ রক্ষায় দিনভর প্রানপন চেষ্টা করছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়া কমে গেলেই সমস্যা কাটিয়ে ধান ঘরে তুলতে সক্ষম হবেন কৃষকরা জানান, সার্বক্ষনিক তদারকিতে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী।

এদিকে কৃষি কর্মকর্তা মোবরক আলী জানান, পাহাড়ি ঢলে জেলার নদী তীরবর্তী ২ শাতাধিক হেক্টর জমির ধান ও বিভিন্ন জাতের সবজি নষ্ট হয়েছে। তবে এখনো কোথও বাঁধ ভঙ্গেনি। ইতোমধ্যে ধান কিছুটা পাকা কাটতে শুরু করেছেন কৃষকরা। আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যেই পুরোদমে ধান কাটাই শুরু হবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি। যদিও বাঁধ ভাঙ্গার আতঙ্কে কাচা ধানই কাটতে শুরু করেছেন হাওরাঞ্চলের কৃষকরা।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments