কলেজ শেষে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন নেত্রকোনা সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাজিয়া সুলতানা লিজা (৪০)। শনিবার (৬ আগস্ট) সকালে ১১ টায় নিজ কর্মস্থল নেত্রকোনা সরকারী কলেজ প্রাঙ্গণে জানাযা শেষে পৌর গোরস্থানে কবরস্থ করা হয়। জানাযায় শিক্ষক শিক্ষার্থীসহ সহকর্মী শুভাকাঙ্খিরা অংশ নেয়। এর আগে তিনি শুক্রবার বিকালে ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে মৃত্যু হলে রাতে নিজ জেলায় নিয়ে আসা হয় মরদেহ। রাজিয়া সুলতানা মোহনগঞ্জ উপজেলার তেতুলিয়া ইউনিয়নের বড় পাইকুড়া গ্রামের মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রহমান মুকুল ও সৈয়দা পারুল বেগম দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান।
জানা গেছে, গত বুধবার (৩ আগস্ট) কর্মস্থল থেকে ময়মনসিংহের ভাড়া বাসায় ফিরছিলেন নেত্রকোনা সরকারী কলেজের সহকারী অধ্যাপক রাজিয়া সুলতানা। পথে নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বাস-সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে বাস উল্টে খাদে পড়ে যায়। এসময় কয়েকজন আহত হলে তিনিও গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠালে আশংকাজনক অবস্থায় তাকে আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে দুদিন চিকিৎসার পর অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে বিকাল সাড়ে চারটায় মারা যান তিনি। এদিকে প্রিয়জনের মুত্যুর খবর এলাকায় আসলে সহকর্মী শিক্ষার্থী ও স্বজনদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।
পরে শনিবার সকালে নেত্রকোনা সরকারী কলেজ প্রাঙ্গণে জানাযায় হাজারো মানুষের ভীর জমে। জানাযায় অংশ নেন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নুরুল বাসেত, নেত্রকোনা সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. সিরাজুল ইসলাম, মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক চিত্রশিল্পী মো. কামরুল হাসানসহ নিজ প্রতিষ্ঠানের এবং ২৮ তম বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের সহকর্মী শিক্ষার্থীসহ বন্ধু-বান্ধব স্বজনরা।
কর্মজীবনের শুরু থেকে মাকে নিয়ে তিনি নেত্রকোনা পৌর শহরের নাগড়া এলাকায় বসবাস করতেন। ছয় মাস আগে ওই বাসা পরিবর্তন করে ময়মনসিংহ শহরে একটি ভাড়া বাসায় গিয়ে ওঠেন। বিবাহ না করায় তিনি মায়ের সাথেই থাকতেন।
ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজ থেকে পড়ালেখা শেষ করে ২৮তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে ২০১০ সালে নেত্রকোনা সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন রাজিয়া।