Tuesday, April 30, 2024
মূলপাতানেত্রকোনার সংবাদনেত্রকোনা সদর উপজেলানেত্রকোনা জেলায় ৭৭ টি ইউনিয়নে পানি বন্দী সাড়ে পাঁচলাখ

নেত্রকোনা জেলায় ৭৭ টি ইউনিয়নে পানি বন্দী সাড়ে পাঁচলাখ

পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনা জেলার ১০ উপজেলা প্লাবিত হলেও সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে ৭৭ টি ইউনিয়ন। গত এক সপ্তাহ ধরে পানিবন্দী মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সাড়ে পাঁচ লাখে। এমন অবস্থায় জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় পানিবন্ধীদের উদ্ধারে কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপশি বিভিন্ন সংগঠন জনপ্রতিনিধিরাও দিচ্ছে ত্রাণ সহায়তা। সরকারী হিসেব অনুয়ায়ী বন্যার পানিতে ডুবে ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত ৫ জনের খবর পাওয়া গেছে। এদিকে কলমাকান্দায় ডায়রিয়ায় মারা গেছেন একজন।

এদিকে কলমাকন্দায় উব্দাখালি নদীর পানি বিপৎসীমার ৫২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে দুপুর পর্যন্ত নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডর নির্বাহী প্রকৌশলী মোহন লাল সৈকত। খালিয়াজুরীতে ধনু নদীর পানি রয়েছে বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার উপরে। এদিকে জারিয়া পয়েন্টে কংশ নদীর পানি নেমেছে বিপৎসীমার ৪১ সেন্টিমিটার নীচে। দূর্গাপুরে সোমশ^রীর নদীর পানিও বিপৎসীমার ৩৬১ সেন্টিমিটার নীচে নেমেছে।

অন্যদিকে বন্যায় প্রথম কবলিত জেলার দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার পানি কিছুটা কমে আসলেও নতুন নতুন এলাকায় পানিবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বেড়েছে জেলা শহরের মগড়া নদীর পানি। উপছে প্লাবিত হয়েছে নদী তীরবর্তী সহ জেলা প্রশাসকের বাস ভবনের পিছনের বাড়িঘরগুলোও। ডুবে আছে জেলা থেকে উপজেলার মূল সড়কসহ গ্রামীণ প্রায় সকল সড়ক। দুর্ভোগ নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। বাড়ি থেকে যেমন বের হতে পারছে না। তেমনি বাড়ি ঘরে গিয়ে অন্যরাও খোঁজ নিতে পারছে না এমন এলাকা রয়েছে বহু। পানিতে তলিয়ে রয়েছে মদন, আটপাড়া, মোহনগঞ্জ উপজেলাসহ প্রতিটি উপজেলার বেশকিছু গ্রাম। হাঁস মুরগি সহ বিভিন্ন গবাদি পশু মূল সড়কের কাছে রাখছেন ভোগান্তির শিকার মানুষগুলো। পানি যেনো সরছেই না।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান গেছে, জেলার ১০ উপজেলাই কমবেশি ক্ষত্রিগ্রস্থ হয়েছে। তারমধ্যে বেশি খারাপ হয়েছে ৭৭ টি ইউনিয়ন। সাড়ে পাঁচলাখ মানুষ আমাদের পানিবন্দী। মোট ৩৬২ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এরমধ্যে আশ্রয় নিয়েছে ১ লাখ ১৫ হাজার মানুষ। ২০ হাজার গাবাদি পশু। পানিবন্ধী মানুষদের জন্য ৯০ টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।

জেলা প্রশাসন থেকে ৫৯৩ মেট্রিক টন চাল এবং ৩৩ লক্ষ টাকা দেয়া হয়েছে। ৬২৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। আমাদের পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। কোন অসুবিধা হবে না। যেখানেই খবর পাচ্ছি সেখানেই ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে। এই সকল ত্রাণ সঠিকভাবে যেনো পায় সে জন্য সেনাবাহিনী উদ্ধার কাজের সাথে ত্রাণ দেয়ার কাজও করছে।

তিনি আরো বলেন, ১০ উপজেলার সবকটিতেই আমি নিজে গিয়ে পরিদর্শন করে এসেছি। বিভিন্ন জনপ্রতিনিধি, ব্যাক্তি পর্যায়, স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবীরাও ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছেন। আশা করছি কোন মানুষ আর কষ্ট করবে না। এলাকায় পানিবন্ধী মানুষদের কাছে গিয়ে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে আমাদের মেডিকেল টিমগুলো। পাশাপাশি আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতেও পর্যাপ্ত সেবা দিয়ে যাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিয়ে যাচ্ছেন ত্রাণ সহায়তা। কেথাও কেউ ত্রাণ পাচ্ছেনা জানালেই সেখানে পাঠানো হচ্ছে ত্রাণ। আমাদের সকল সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। তবে পানি সরতে হয়তো আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলেও জানান তিনি। তিনি জানান এ পর্যন্ত আমাদের কাছে খবর এসেছে চারজন পানিতে ডুবে মারা গেছে।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments