করোনাকালের সময়কে কাজে লাগিয়ে ইউটিউব দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে নেত্রকোনায় এই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে উচ্চ দামের ফল ড্রাগন। আর এই চাষকে ঘিরে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যায়ে বিভিন্ন হাঁস মুরগী, মাছ, স্ববজিসহ সমন্বিত খামার গড়ে তুলেছেন হাফিজা আক্তার নামের এক নারী। এটিকে ঘিরে অন্তত ওই এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ এফ এম মোবারক আলী জানান, দামী এই ফল শুধু লাভদায়কই নয়। এটি একটি ভেষজ ঔষধও বলা চলে। একবার চাষ করতে পারলে ৩০ থেকে ৪০ বছর পর্যন্ত ফলন ধরে। আর এটির সাথে সাপোর্ট হিসেবে তিনি সমন্বিত খামার করেছেন। যা অত্যন্ত উপকারী। শুধু ধান নিয়ে পড়ে থাকলে হবে না। আমাদের কৃষিতে বিপ্লব ঘটাতে হবে। আর এভাবেই নারী পুরুষ এগিয়ে আসলে সেটিও সম্ভব বলে আমি মনে করি । তিনি আরো বলেন কৃষিতে শুধু পুরুষরাই এগিয়ে। এবার নারীরাও আসছেন। এতে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ভিষণ পূর্ন হবে বলে আমি মনে করি। আমরা দেখেছি বাগানটি। উদ্যোক্তাকে সাধুবাদ জানাই এমন একটি উদ্যোগের জন্য। তিনি আমাদের কাছে যে কোন ধরনের সহায়তা চাইলে আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করবো।
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার আটপাড়া উপজেলার মদন সড়কের পাশে গত চারমাস ধরে তৈরী করা এমন একটি নান্দনিক কৃষি ফার্ম দেখে অনেকেই আগ্রহ নিয়ে দেখতে যান খামারটি। অনেকেই মনে করেন শুধু আয় নয় এমন উদ্যোগে খাদ্য চাহিদার ঘাটতিও পূরণ হবে স্থানীয় ভাবে। নিজ শ^শুর বাড়ি এলাকা আটপাড়ার তলিগাতী ইউনিয়নের টেংগা গ্রামে ৩২ কাঠা অর্থাৎ ৩ একর ২০ শতাংশ জায়গায় এ এস সি এগ্রো ফার্মটি প্রতিষ্ঠা করেছেন এডভোকেট হাফিজা আক্তার।
এ বছরের জানুয়ারী মাস থেকে তিনি শুরু করেছেন ভিয়েতনাম জাতীয় ড্রাগনের চাষ। ১৫ শ খুঁটিতে মোট ৬ হাজার চারা লাগিয়েছেন। এর সাথে সাথে হাঁস, মুরগী, ছাগল, ভেরা, কবুতর পালন করছেন। সেইসাথে পুুকুর খনন করে করছেন দেশীয় মাছ চাষ। পুকুরের চারপাশ জুরে নারিকেল ৫০ টি, কমলা ১০টি, লেবু ৩০টি, পেপে গাছসহ বিভিন্ন চারা গাছ লাগানো হয়েছে। হচ্ছে শাক সবজির চাষও।
আর এ সকল কাজে এলাকার দিন মজুর শ্রমিকরা পেয়েছেন কর্মসংস্থান। স্থায়ীভাবে ফার্মটিতে ৫ জন বেতনভুক্ত হয়ে কাজ করলেও আরো ৩০ থেকে ৩৫ জন শ্রমিক দিন হিসেবে কাজ করছেন। এতে করে এলাকায় বিভিন্ন ধরনের পুষ্টির জোগান হচ্ছে। বর্তমানে হাঁসের খামার থেকে প্রতিদিন ৪০০ করে ডিম পাচ্ছেন। যা দিয়ে চলে যাচ্ছে শ্রমিকদের বেতনসহ অনুসাঙ্গিক খরচ। এলাকার মানুষজনও এটাকে দেখছেন একটি আয়বর্ধক কর্মকান্ড হিসেবে। প্রায় ৫০ লাখ টাকা ব্যায়ে ড্রাগন চাষের সহায়ক হিসেবে হাঁস ৬০০, কবুতর ৮০ জোরা, দেশীয় মুরগী ১০০ ভেরা ৪ টি, ছাগল ১৬টিসহ শতাধিক ফলদ গাছ লাগানো হয়েছে ফার্মে।