এবার নেত্রকোনায় একদিনে দুইবার টিকা পেলো জজ মিয়া নামে এক ব্যাক্তি। ঘটনাটি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘটেছে আজ বুধবার।
জজ মিয়া (৩৯) নামে মুদি দোকানীকে এক মিনিটের মধ্যে দুই বার সিরিঞ্জ লাগানো হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন তাকে করোনা ভাইরাসের দুই ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। এ খবরে এলাকা জুরে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্যের। জজ মিয়া মোহনগঞ্জ পৌর শহরের আল মবিন রোডের বাসিন্দা।
জানা গেছে, আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টারদিকে মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টিকা নিতে যান জজ মিয়া। এ সময় এক মিনিটের ব্যবধানে তাকে দুটি টিকা দেন উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (সেকমো) আলমগীর হোসেন। তবে আলমগীর হোসেন বিষয়টি মিথ্যা উল্লেখ করে জানান, তিনি দুটো টিকা কেন দেবেন? দুটো টিকা দিলেও তো সময় লাগে? তবে জজ মিয়া আবার হাসপাতালে আসলে তার হাত চেক করে তাকে দেখিয়ে দেয়া হয়েছে। দুটো টিকা দিলে দুটো ছিদ্র থাকতো।
জজ মিয়া বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন ভবন টিকা নিতে যাই। টিকা পুশকারী আলমগীর হোসেন প্রথমে ডান হাতে একটি টিকা পুশ করেন। এরপর আলমগীর টিকার কাগজ দেখতে চান। কাগজপত্র দেখানোর পর ডান হাতের একই স্থানে আরেকটি টিকা পুশ করেন।
জজ মিয়া আরও বলেন, দুটি টিকা গ্রহণ করার বিষয়টি নিয়ে দুশ্চিন্তায় ভুগছিলাম। এতে কোন প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে কিনা তা জানতে হাসপাতালের টিএইচও নূর মোহাম্মদ শামছুল আলমের কাছে গিয়েছিলাম। তবে তিনি কোন ধরণের পরাশর্ম না দিয়ে উল্টো আমার প্রতি রেগে গিয়ে বলেন, এই টিকা এন্টিভাইরাস। এতে কোন সমস্যা নেই। টিকা নেওয়ার পর বিকাল থেকেই ভীষণ জ্বর ও মাথা ব্যথায় ভুগছি। ২৪ ঘণ্টা আমাকে অবজারভেশনে রাখবে বলেছিলো টি এইচও। সন্ধ্যা পেরিয়ে গেলেও হাসপাতালের কেউ এখানো আমার খোঁজ নেয়নি। এতে করে ভীষণ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছি। জানি না কি হয়।
এদিকে টিকা নেয়া শেষে জজ মিয়া এলাকার কয়েকজনের সাথে বিষয়টি জানালে দুই বার টিকা নেওয়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে চলে আসে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক গুঞ্জন ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূর মোহাম্মদ শামছুল আলমের সাথে স্থানীয় সাংবাদিকরা কথা বলতে কয়েক দফা ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এ ব্যাপারে মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ছাব্বির আহম্মেদ আকুঞ্জি বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি।
বিষয়টি অবগত করলে জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেলিম মিয়া বলেন, টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে হাসপতাল কর্তৃপক্ষ ও টিকা গ্রহণকারীসহ সকলকেই সতর্ক থাকা উচিত।
টিকা গ্রহণকারীকে ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এ বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলবো তিনি আরও বলেন, দেশের আরও কয়েকটি জেলায় এমন ঘটনা ঘটেছিলো। তাদের কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়নি। জজ মিয়ার বেলায়ও তেমন কোন সমস্যা হবে না বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য- গত ২৪ জুলাই পৌরশহরের বার্ত্তারগাতী এলাকার জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তিকেও একই সময়ে দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছিল।