হুমায়ুন কবির, কেন্দুয়া: নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার চিরাং ইউনিয়নের দুল্লী গ্রামে তিন বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের শিকার শিশুটির পরিবারের দাবি গ্রামের মাতবররা দফায় দফায় সভা করেও হাসপাতালে ভর্তি হতে দিচ্ছে না। সেই সাথে এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে একই গ্রামের একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে।
এদিকে শিশুটির মা ন্যায়বিচার দাবী করলেও এলাকার একটি প্রভাবশালী মহলের চাপে কোন বিচারিক আইনেই যেতে পারছে না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) খোঁজ নিয়ে শিশুটির মায়ের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, গত (৮মার্চ) শিশুটি বাড়িতে খেলা করছিলো। আমরা গরীব মানুষ তাই শিশুকে রেখেই কাজ করতে যাই। পরে শিশুটিকে একা পেয়ে পাশের বাড়ির আবুল মিয়ার ছেলে সাগর মিয়া ডেকে নেয়। এরপর আমার মেয়ের সাথে খারাপ কাজ করে। এ ঘটনা শিশুটির ফুফা দেখে ফেলেন।
এর পর রাতে শিশুটি সারারাত কান্না করতে থাকে আর পানি দিতে বলে। পরের দিন কেন্দুয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেন ময়মনসিংহ অথবা নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিতে। কিন্তু পরেসাবেক ওয়ার্ড মেম্বার হাসপাতালে নিতে দেয় নাই।
বাড়ি নিয়ে যাইতে বললে বাড়ি নিয়ে আসি। এর পর রাতে মেম্বার মিটিং করে বলেন পরের দিন ময়মনসিংহ বা নেত্রকোনা নিয়া ডাক্তার দেখাবে। কিন্তু আর কিছু করে নাই। এই ভাবে তিন চারদিন চলে গেছে। পরে আবার মিটিংয়ে বইয়া কইছে এর কঠিন বিচার করব। এইডাও করে নাই। এহন কইছে যে ভাবে আছে এই ভাবে তাহার লাইগা। এহন কঠিন বিচারও করেনা। সাহায্য ও করেনা। এ বিষয়ে শিশুটির ফুফার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, একই গ্রামের হাইবুল মিয়ার বাড়ির পিছনে হঠাৎ একটি শিশু বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনে এগিয়ে আসলে দেখতে পাই পাশ্ববর্তী বাড়ির আবুল মিয়ার ছেলে সাগর মিয়া শিশুটির পাশে। পরে আমাকে দেখে সাগর পালিয়ে যায়।
পরবর্তীতে বাচ্চাকে উদ্ধার করে তার মায়ের কাছে বুঝিয়ে দেই। এছাড়াও শিশুটির দাদা বলেন, যে ছেলেটি এঘটনা ঘটিয়েছে সে তো আমার নাতীকে মেরেও ফেলতে পারতো। তিনি এ ঘটনার ন্যায় বিচার দাবী করেছেন।
এ ব্যাপারে শিশুটির কাছের এক আত্মীয় বলেন, এখন মেয়েটা ছোট কিন্তু মেয়েটা বড় হলে বিয়ে দেয়ার সময় হলে তখনও মানুষ এ ঘটনার কথা বলবে। তখন মেয়েটার বিয়ে দিব কি করে। তাছাড়া আজ এটা করে মেয়েটা গরীবের সন্তান বলে অপরাধী পার পেয়ে যাবে।
কিন্তু পরে যে আরেকদিন আরেকজনেরটা করবে না এইটার নিশ্চয়তা কে দেবে। এ ব্যাপারে মিটিংকারী সালাম মেম্বারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, যে কাজ করেছে এটি অত্যন্ত খারাপ। আমরা বলেছিলাম ব্যাবস্থা নিতে। আরেকটা মিটিং হওয়ার কথাছিলো।
কিন্তু গরীব মানুষ তো ওরাই যায় নাই। কোথাও কাউকে বলেও না তারা। এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ওসি কাজী শাহ নেওয়াজ এর সাথে মঙ্গলবার রাতে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভিকটিমের পরিবারের লোকজন মৌখিক অভিযোগ নিয়ে থানায় আসলে আমরা তাদেরকে বলেছিলাম লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে। পরে আর তারা আসে নাই। এ বিষয়টি আমি আমার উর্ধ্বতন পুলিশ অফিসার কে জানিয়েছি। ভিকটিম পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।