সোহান আহমেদ:
তৃনমূলে আওয়ামীলীগকে সু-সংঘঠিত করতে নেত্রকোনার প্রতিটি উপজেলায় সম্মেলনের উদ্যোগে উজ্জীবিত তৃনমূল কর্মী সমর্থকারা। তবে নতুন নেতৃত্ব মানা না মানা নিয়ে সৃষ্টি হচ্ছে হট্টগোল। ঘটছে মঞ্চ ভাংচুর ও হামলার ঘটনা। আহত হচ্ছেন অসংখ্য নেতাকর্মী। দলীয় কার্যালয় দখল নিয়ে দু-পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান নিয়ন্ত্রনে সাময়িক সমাধান হলেও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ ছিলেন পদ বঞ্চিতরা।
অবশেষে শনিবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী খান খসরু এমপির ফেইজবুক পেইজে কেন্দ্রীয় নেতাদের ঘোষিত কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে স্ট্যাটাস্ দেয়ায় কিছুক্ষনের মাঝেই খবরটি ছড়িয়ে পরে তৃনমূলে। যদিও এর আগেই শুক্রবার খালিয়াজুরীতে দু-পক্ষের ব্যাপক উত্তেজনা উপেক্ষা করে প্রশাসনিক সহায়তায় দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করেন নতুন কমিটির সভাপতি ও সধারন সম্পাদক। এ সময় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও যুবলীগের সাবেক সভাপতি শাছুজ্জামান তালুকদার সোয়েব সিদ্দিকীসহ আরো অনেকই উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে শনিবার দিনভর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন নেতাকর্মীদের ফেইজবুক থেকেও শুরু হয় অভিনন্দন বার্তা। যদিও এর আগেই পদবঞ্চিতদের নেতৃত্বে ঘটে যাওয়া হামলা ভাংচুরে ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় দলীয় ইমেইজ ও আহত হন নব-নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক সাদেকুর রহমানসহ প্রায় অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী। যেকোন সময় সংঘর্ষের আশঙ্কায় দোকানপাট বন্ধ রাখেন ব্যাবসায়ীরা।
শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে জানা গেছে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃনমূলকে সু-সংঘঠিত করা হচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় নেত্রকোনার প্রতিটি উপজেলায় সম্মেলনের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা আওয়ামীলীগ। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, কেন্দ্রীয় কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম নাদেল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল এমপি সহ বেশকজন কেন্দ্রীয় নেতা। এরই মধ্যে নেত্রকোনার মদন ও খালিয়াজুরীতে সম্পন্ন হয়েছে ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সভাপতি/সম্পাদক পদে উঠে এসেছে নতুন নেতৃত্ব। এতেই ক্ষুব্ধ হন পদ বঞ্চিতরা।
(১৯শে অক্টোবর) হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরীতে সম্মেলন শেষে অজিত বরণকে সভাপতি ও সাদেকুর রহমানকে সাধারন সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষনা করা হয়। এ সময় সাবেকদের উস্কানিতে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতেই ঘটে মঞ্চ ভাংচুর ও হামলার ঘটনা। চলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, আহত হয় কমপক্ষে অর্ধশত নেতাকর্মী। এমন ঘটনার পর থেকে দোকানপাট বন্ধ রাখেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
দীর্ঘদিন পর হাওরাঞ্চলে নতুন নেতৃত্ব উঠে আসায় তৃনমূলে সন্তুষ্ট থাকলেও সিন্ডিকেট ভেঙ্গে যাওয়ায় মানতে পারছে না সাবেক নেতারা এমন অভিযোগ তুলেন আহতরা। ক্ষুব্ধ হয়েই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেন তারা।
এমতাবস্থায় দু-পক্ষের মুখোমুখি অবস্থান নিয়ন্ত্রনে উদ্যোগ নেয় স্থানীয় প্রশাসন। (২১ অক্টোবর) শুক্রবার কয়েকদফা আলোচনায় সাময়িক সমাধান হলেও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত না মানার অনর অবস্থানে থাকেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অতাউর রহমান, সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সম্পাদক আবু ইসহাক, যুবলীগ সভাপতি আবু ফালাক, মেন্দিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান লোকমান হেকিমসহ তাদের কর্মী সমর্থকরা। সকাল থেকেই লাটিসোটা নিয়ে অবস্থান নেয় পদবঞ্চিতরা। এমন খবরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে প্রশাসন।
জেলা আওয়ামীলীগের তথ্যমতে, আগামী ২৪ শে আক্টোবর বারহাট্টা, ২৫ অক্টোবর দূর্গাপুর ও পরবর্তীতে কলমাকন্দাসহ সকল উপজেলায় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। চলতি বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে হতে পারে জেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সস্মেলন। শান্তিপূর্ণ পরিবেশেই কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিবেন সাবেকরা। এমনটাই প্রত্যাশা তৃনমূল সমর্থকদের।