সম্পাহ ধরে প্রচন্ড বাতাস। মেঘলা আকাশ। দুদিন ধরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। তার ওপরে ওজানের ঢলে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে খালিয়াজুরীর ধনু নদের পানি। নির্ঘুম কৃষকের ফসল হারাবার চিন্তা পিছুই ছাড়ছে না। এর উপর রয়েছে উপজেলার কির্তনখোলা ফসল রক্ষা বেড়িবাঁধের ভাঙ্গন। দীর্ঘ ১৮ দিন ধরে কৃষক বাঁধ টিকিয়ে রাখা এবং কাঁচা ধান কাটায় ক্লান্ত। গেল সপ্তাহ ধরে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় প্রশাসন শ্রমিক দিয়ে ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করেই যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, এবার নেত্রকোনা জেলার হাওরাঞ্চলের ধান পাকতে বাকি ছিলো মাসেরও ওপরে। কিন্তু ভারতের চেরাপুঞ্জির বৃষ্টি যেনো ঢলের পানি হয়ে অভিশাপে রূপ নিলো। ধান পরিপক্ক হতে মাসখানেক বাকি থাকলেও নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল খালিয়য়াজুরীর ধনু নদের পানি বেড়ে বাঁধগুলো পড়েছে হুমকিতে। ৫৫ কিলোমিটার খালিয়াজুরীর সবচেয়ে বড় বাঁধের সাত কিলোমিটার এলাকার কির্তনখোলা অংশে শুরুতেই দেখা দেয় ভাঙ্গন। ফসল বাঁচাতে শত শত কৃষক স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি কেটে বাঁধ মেরামত করতে থাকে। কিন্তু ফাটল ঠেকাতে গিয়ে প্রতিদিন কাজ করলেও নতুন নতুন পয়েন্টে দেখা দেয় ধ্বস।
এভাবেই গত ১০ দিন পার করেছেন কৃষকরা। শেষমেষ বাঁধের আশা ছেড়ে কাঁচা আধাপাকা ধানই কাটতে মাঠে নেমেছেন। অন্যদিকে অব্যাহত ফাটল ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড স্থানীয় প্রশাসনের সহযোতিায় শ্রমিক দিয়ে বাঁধ আটকানোর চেষ্টা করছে।
এদিকে বুধবার সকাল থেকে কাল বৈশাখি ঝড়ের প্রচন্ড বাতাসের সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। দুপুর পর্যন্ত ধনু নদের পানি বিপৎসীমার ৩০ সেিিন্টমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহনলাল সৈকত। তিনি আরো বলেন, বাঁধের ভেতরের ফসল মোটামোটি কাটা হয়ে গেছে। যেটুকু রয়েছে আমরা আশা করছি কাটতে পারবে কৃষক। তবে বাঁধ উপচে যে কোন সময় পানি ঢুকতে পারে বলেও তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে ধনু নদের তীরবর্তী খালিয়াজুরী উপজেলার মেন্দিপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের দিকে নদের পানি ধেয়ে যাচ্ছে। রসুলপুর জগন্নাথপুসহ নদের পশ্চিমপাড়ে এখনো মাঠে ৭০ ভাগ ধান রয়ে গেছে। যে কোন সময় তলিয়ে যাবার শঙ্কা থেকেই গেলো কৃষকের মাঝে। এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ এফ মোবারক আলী জানান, হাওরে ধান ৩০ ভাগ কাটার বাকী আছে। সব কেটে ফেলেছে।