ফয়েজ আহম্মদ হৃদয়, মদন: কৃষকের কান্নায় ভারী হয়ে যাচ্ছে নেত্রকোনার মদন উপজেলার হাওরাঞ্চল। রবিবার রাতের কয়েক মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ে হাজারো কৃষকের স্বপ্ন মূহুর্তে বিলীন হয়ে গেছে। শীষে ধান নেই, জমিতে শুধু ধান গাছ দাড়িয়ে রয়েছে। সোমবার সকাল থেকে হাওরাঞ্চলে চলছে কৃষকদের বিলাপ করা কান্না।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বোরো মৌসুমে পৌরসভাসহ উপজেলার ৮ ইউনিয়নে এবার ১৭ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো ধানের ফলন ভাল হয়েছে। লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হবে বলে আশা ছিলো কৃষকদের। ২৮ ধানের পাশা পাশি কাটা শুরু হয়েছে বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড ধান। কষ্টে ফলানোর সোনার ফসল ঘরে তুলতে অনেকেই ব্যস্ত সময় পার করছিলেন। গেল কয়েক বছরের চেয়ে এবার উপজেলায় রোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বেশির ভাগ জমির ধানই পাকতে শুরু করেছিলো। ধান ঘরে তুলতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন কৃষক- কৃষাণীরা।
কিন্তু গত রাতের কয়েক মিনিটের কালবৈশাখী ঝড়ের গরম বাতাস যেন কৃষকদের সব স্বপ্ন বিলীন করে দিয়েছে। ধার- দেনা করে এক ফসলী জমির ফসল হারিয়ে পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই কৃষকের।
তিয়শ্রী ইউনিয়ের বাগজান গ্রামের কৃষক নূরুল ইসলাম, শামীম আহম্মেদ, কোঠুরীকোনা গ্রামের রোজ আলী, পৌর সভার ৭ নং ওয়ার্ডের সবুজ মিয়াসহ অনেকেই জানান, হাওরের এক ফসলী বোরো জমির ফসল দিয়ে সারা বছর পরিবার নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। রবিবার রাতের কয়েক মিনিটের গরম বাতাসে জমির সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। ঋণ করে ফসল উৎপাদন করে ছিলাম। এখন সারা বছর খাবো কি আর কি দিয়ে পরিশোধ করবো ঋণ। সরকার যদি আমাদের পাশে না দাড়ায় পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
সোমবার সকালে মদন উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কদ্দুছসহ কৃষি বিভাগের লোকজন হাওরাঞ্চল পরিদর্শন করেছেন। ভারপ্রাপ্ত কৃষি অফিসার ও কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার রায়হানুল হক জানান, গত রাতের কালবৈশাখী ঝড়ে কৃষদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। আমাদের লোকজন মাঠে আছে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য এখনো বলা যাচ্ছে না। ছবি আছে: ছবিটা মদন উপজেলার চানগাও শাহপুর গ্রামের সামনের হাওর থেকে তোলা।