স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়নে দেশব্যাপী অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়গনস্টিক সেন্টার বন্ধে অভিযান চললেও নেত্রকোনায় নানা অনিয়ম অব্যবস্থাপনাতেই চলছে মানব দেহের স্পর্শকাতর অঙ্গ চোখের চিকিৎসা কার্যক্রম। সমাজ কল্যান সমিতির নামে পরিচালিত সাতপাই চক্ষু হাসপাতালে সাধারন রোগীদের সাথে করা হচ্ছে অভিনব প্রতারণা। গেল কয়েক বছর নিয়মিত ডাক্তার না থাকলেও ঔষধ কোম্পানি প্রতিনিধিদের পরামর্শে প্যারামেডিক্যালরাই লিখছেন ব্যবস্থাপত্র। এতে প্রতারণার স্বীকার হচ্ছেন দূরদুরান্ত থেকে আসা রোগীরা।
জানা গেছে, স্বল্প ব্যায়ে সাধারন মানুষের চক্ষু চিকিৎসায় ১৯৮৬ সালে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় নেত্রকোনা পৌর শহরের সাতপাই নদীর পাড়ে গড়ে তোলা হয় একমাত্র চক্ষু হাসপাতালটি। কিন্তু বর্তমানে সমাজ কল্যান সমিতির নামে পরিচালিত হাসপাতালটিতে প্রশাসেনর তেমন কোন নজরদারি না থাকায় নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনায় হয়রানিসহ প্রতারণার শিকার হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা সাধারন রোগীরা। গত কয়েক সপ্তাহ পর্যবেক্ষন ও সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় প্রতিদিন অন্তত অর্ধশত রোগী সকাল ৯টা থেকে এসে টিকিট করে ডাক্তারের অপেক্ষায় থেকে অতিষ্ট হয়ে পরেন। কেন্দুয়া থেকে আসা রুবিনা, ফচিকা থেকে আসা আসমা, পূর্বধলা থেকে আসা আলিম উদ্দিনহর বেশ কয়েকজন রোগী ও স্বজনরা জানান, এর আগেও এই হাসপাতালে এসেছেন। কিন্ত অভিজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় বারবার প্রতারিত হয়েছেন। সেইসাথে হাসপাতাল থেকেই অতিরিক্ত টাকার ঔষধও কিনতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অভিযোগ করছেন তারা। ঔষধ প্রতিনিধিদের পরামর্শে নিয়মিত রোগী দেখেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্যদের সাবেক সাধারন সম্পাদক মতিউর রহমান খানের বোন ও নেত্রকোনা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিরুজ্জামানের স্ত্রী নাজমুন্নাহার খানম মিনা। তিনি প্যারামেডিক্যাল দাবি করলেও নিয়মিতই রোগী দেখে দিয়ে যাচ্ছেন ব্যবস্থাপত্র। এতে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন সাধারন মানুষ।
এমন অনিয়ম প্রতারণা বন্ধে জেলা প্রশাসেনর সার্বিক তত্বাবধানে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালনাতেই নিয়মিত চিকিৎসা ব্যাবস্থার দাবি করছেন ভুক্তভোগীসহ স্থানীয়রা। পদাধিকার বলে হাসপাতালটির সভাপতি জেলা প্রশাসক হলেও সাবেক সম্পাদকসহ কতৃপক্ষের অনুমতি নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে ব্যবস্থাপত্র লিখছেন বলে দাবি কর্তব্যরত প্যারামেডিক্যাল নাজমুন্নাহার খানম মিনা। তবে এমন অনিয়মের সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়ায় প্রথমে সংবাদ কর্মীদের ক্যামেরা ছিনিয়ে নিতে চাইলেও পরবর্তীতে ক্ষমা চেয়ে ম্যানেজ কারার চেষ্ট করেন অভিযুক্ত নামে মাত্র ডাক্তার মিনা ।
এদিকে দীর্ঘদিন ডাক্তার না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়মিত ডাক্তার নিয়োগে ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি অনিয়ম বন্ধে নবাগত জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলে অচিরেই উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছেন হাসপাতালটির বর্তমান কতৃপক্ষ সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল্লাহ আল-মামুন।
স্বল্প খরচে চক্ষু চিকিৎসার একমাত্র হাসপাতালটি পরিচালিত হোক জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে। এতে স্বচ্চতা আসবে সাধারনর মানুষের চোখের চিকিৎসা সেবায়। এমনটাই দাবি ও প্রত্যাশা নেত্রকোনা বাসীর।