Monday, May 6, 2024
মূলপাতাঅন্যান্যপ্রভাবশালীদের খপ্পড়ে পড়া মগড়া নদী উদ্ধারে নেই উদ্যোগ

প্রভাবশালীদের খপ্পড়ে পড়া মগড়া নদী উদ্ধারে নেই উদ্যোগ

যে নদীর অববাহিকায় গড়ে ওঠা নেত্রকোনা শহর। সে নদী আজ দখল দুষণে নাব্যতা হারিয়ে বিলীনের পথে।

প্রতি বছর নদী রক্ষায় নানা উদ্যোগের কথা জানালেও বাস্তবে তার খোঁজ মেলে না।

নেত্রকোনা শহরকে প্যাঁচিয়ে রাখা মগড়া নদী এখন অস্তিত্ব সঙ্কটে বলছেন স্থানীয়রা।
নানা তালবাহানায় প্রভাবশালী দখলদারদের খপ্পড়ে থাকা নদী উদ্ধারে নেই উদ্যোগ।
এদিকে নদী রক্ষায় বারবরের মতোই ফের আশ্বাস পানি উন্নয়ন বোর্ডের।

সরেজমিনে দেখা গেছে,
এক সময়ের কালিগঞ্জ বাজার থেকে আজকের শহর।
মগড়া নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা ব্যবাসয়ীক বাজারে বড় বড় নৌকা লঞ্চ ষ্টিমার আসতো দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে।
সেই ব্যবসার প্রসারে আজকের গড়ে ওঠা শহরের নামকরণ হয় নেত্রকোনা।
কিন্তু আজ সেই নদীই দখল হয়ে অস্তিত্ব সঙ্কটে। দখলে আর দূষনে এখন একেবারে বিলীনের পথে।
পুরো শহর জুরে সাপের মতো প্যাঁচিয়ে থাকা খরস্রোতা নদীর পানি ব্যবহারেও রোগের ভয়।

দিনে দিনে নদীটি ড্রেনের মতো হয়ে শীর্নকায় মরা খালে পরিণত হয়েছে।
তার উপর এখন পুরো শহরের ময়লা অবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে।
শত বছর পূর্বে মগড়া নদীটির পাশে নেত্রকোনা নামকরণ হওয়া শহরের মাঝখানে প্রায় ৬ কিলোমিটার জুরে থাকা অর্ধশতাধিক ঘাট বিভিন্ন দখলে বন্ধ হয়ে পড়েছে নদীর পানি ব্যবহার।
প্রতিনিয়ত নদীতে মাটি ফেলে পাড় ভরাট করে চলে স্থাপনা তৈরি।

তরুণ প্রজন্মের কায়েস আহমেদ, যুবক হীরা খান এলাকাবাসী উন্নয়ন কর্মী মৃণাল কান্তি চক্রবর্তী এবং নদী রক্ষা কমিটির সদস্য শ্যামলেন্দু পাল বলেন, সরকারের নির্দেশ না মেনে সিএস মূলের পরিবর্তে নদীকে বিআরএস মুলে একবার উচ্ছেদ অভিযান দেখালেও পরবর্তীতে আবারও সি এস মূলে দাগ কাটা হয়েছে।
কিন্তু দাগ কাটা পর্যন্তই রয়ে গেছে।
রহস্যজনক কারণে এগুলোর কোন কার্যক্রম পরিরক্ষিত হচ্ছে না।
প্রভাবশীলীরা নদী দখল করে মামলা দিয়ে উচ্ছেদ আটকে রেখেছে।
স্থানীয়দের আরও অভিযোগ, যত্রতত্র নদীর অপব্যবহার বন্ধ করছে না রহস্যজনক কারণে প্রশাসন। কারণ নদীর পাড় ঘেষে কোন দিনই স্থাপনা ছিলো না। সাতপাই থেকে মোক্তারপাড়া পর্যন্ত নদীর এক প্রান্তে শহর ছিলো অন্য প্রান্তে নদী।
আবার অপর সাইড নাগড়া এলাকা দিয়েও একই রকম।
এভাবেই নদীটি আজ পরিছন্ন থাকলে এই শহরটি যেমন পর্যটন শহরে পরিণত হতো। টেমস নদীর মতো। তেমনি দুর্যোগ মোকাবেলায় সাধারণ মানুষের জন্য উপকারে আসতো।
কিন্তু এগুলোকে পাড় দখলের মধ্য দিয়ে নানান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে অঢেল টাকার মালিক বলে গিয়ে এক একজন প্রভাবশালীরা উচ্ছেদ কাজই আটকে দেয় এখন। কাজেই পরবর্তী প্রজন্মের সার্বিক নিরাপত্তায় তারা চান নদীর দখল উচ্ছেদ করে পরিবেশ বিপর্যয় থেকে এলাকাটিতে বাঁচানোর।

এদিকে বছরের পর বছর নদী বাঁচাতে পরিবেশবাদী সংগঠন গুলোর দাবীর প্রেক্ষিতে সরকার উচ্ছেদ অভিযানের উদ্যোগ নেয়।

কিন্তু দেশের সকল নদী সিএস মূলে উচ্ছেদ অভিযান হলেও নেত্রকোনার মগড়া নদী দখলদারদের স্বার্থে বি আর এস মূলে বিগত ২০২০ সনে দুই শতাধিক উচ্ছেদ অভিযান দেখানো হয়েছে কাগজে কলমে।

এদিকে মগড়া নদীকে জেলার একটি প্রাণ উল্লেখ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উর্ধতন কর্মকর্তা দখলের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন নদীর বর্তমান জীবন বিপন্ন।
এটিকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে। জাতীয় নদী কমিশনের তালিকা অনুযায়ী কাজ হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারওয়ার জাহান।
তিনি বলেন এছাড়াও এই নদীটিকে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে পুনঃখনন কাজের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।
এলাকার সাধারণ মানুষের দাবী নদীটিকে উচ্ছেদ অভিযানে দখলমুক্ত করা।

এটি সম্পুর্ন করতে পারলে পানি উন্নয়ন বোর্ডেরও একটি আর্জন হবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন নদী এবং জলাধার সিএস মুলেই করার কথা রয়েছে। আমরাও সেটির চেষ্টা করছি।
তিনি আসার আগে যেটি হয়েছে সেটির কাগজ পত্র বিশ্লেষণ করে দেখেছেন উচ্ছেদ করার বিষয়টি। যেগুলো বাকী রয়েছে সেগুলো উচ্ছেদে আপ্রাণ চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানিয়েছেন।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments