নানা বিতর্ক ও নাটকীয়তা শেষে গঠনতন্ত্র সংশোধন করেই গঠন করা হয়েছে নেত্রকোনার সাতপাই সমাজ কল্যাণ সমিতি নামে চলা চক্ষু হাসপাতালের কার্যকরী পরিচালনা পর্ষদ।
বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী সাতপাই নদীরপাড় কার্যালয়ের একটি কক্ষে সাধারণ সভা আহবান করে জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তর। যদিও সভা চলাকালে গঠনতন্ত্র সংশোধন, এক তৃতীয়াংশ নারী না থাকা সহ বিগত দিনের বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে সভা শেষ হওয়ার আগেই চলে যান অনেকেই।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে কোনরকম গঠনতন্ত্র ছাড়াই সমাজ কল্যাণ সমিতির নামে পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে সভাপতি করে চলছিলো চক্ষু হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম। যদিও এতোদিন ছিলোনা নিয়োগপ্রাপ্ত কোন চক্ষু বিশেষজ্ঞ কিংবা এমবিবিএস ডাক্তার।
কিন্তু ডাক্তার না থাকলেও নিয়মিত সেবা দিয়েছেন পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি মতিউর রহমান খানের ছোট বোন হাসপাতালের আইয়া পদে নিয়োগ প্রাপ্ত নাজমুন আরা খানম মিনা।
এমতাবস্থায় চরমভাবে রোগীদের সাথে প্রতারণার বিষয়টি জনসম্মুখে চলে আসায় কিছুটা নড়েচড়ে বসেন নেত্রকোনার সাবেক জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আব্দুর রহমান।
পরবর্তীতে সাবেক কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন করে গঠনতন্ত্র তৈরি করে আবারও নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠনের উদ্যোগ নিতে সদর সমাজসেবা অফিসারকে আহ্বায়ক করা হয়। কিন্তু এরই মাঝে প্রতিষ্ঠানটির নানা অনিয়মের চিত্র উঠে আসে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও টেলিভিশন রিপোর্টে। এরপর থেকেই সাবেক কমিটির নবীন ও প্রবীণ সদস্যরা জেলা সমাজসেবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সহ বিভিন্ন দপ্তরে শুরু করেন দৌড়ঝাপ। নানা নাটকীয়তা শেষে দীর্ঘ এক বছর পর সাধারণ সভা আহ্বান করে সমাজ সেবা অধিদপ্তর। এতে গঠনতন্ত্র সংশোধন করে নতুন সদস্য বাড়িয়ে আবারো পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হয়। সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সহকারী-পরিচালক মাহবুব আলম খাসনবিশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসককে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক করা হয় সাবেক কমিটির সম্পাদক মতিউর রহমান খানকে।
এছাড়াও সহ-সভাপতি করা হয় ডাক্তার শাহীদ উদ্দিন আহমেদ ও সাইদুর রহমানকে। সহ সম্পাদক করা হয়েছে মাজহারুল ইসলাম, কোষাধ্যক্ষ সম্পাদক মতিউর রহমানের জামাতা নব্য সদস্য আবু ইসহাক, সাধারন সদস্য করা হয় বীর মুক্তিযোদ্ধা চন্দন বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমান লিটন, এস এম মহসিন আলম ও সানোয়ার হোসেন।
এ ব্যাপারে নবগঠিত কমিটির সহ-সম্পাদক মাজারুল ইসলাম বলেন, কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিগত দিনের কার্যক্রম নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। আগামী দিনে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হচ্ছে। তবে নবগঠিত কমিটিতে প্রবীণ কোষাধ্যক্ষ পদে থাকা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদকে অব্যাহতি দিয়ে নতুন সদস্য আবু ইসহাকে কোষাধ্যক্ষ করা হয়েছে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সহকারী-পরিচালক মাহবুব আলম খাসনবিশ জানান, কমিটি গঠন ও গঠনতন্ত্র সংশোধন করা হয়েছে। ভবিষ্যতে প্রতিষ্ঠানটি আইন মেনে চলতে বাধ্য থাকবে পরিচালনা পর্ষদ।